মঙ্গলবার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেন জামালপুরের এই সংসদ সদস্য। সেখানেই মন্তব্য করতে গিয়ে ‘ভুল’ করে বসেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের; শেষ পর্যন্ত ফেইসবুকে এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া মেলে।
এ পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।”
নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজ থেকে দেওয়া ওই পোস্টে পরে নিজেরই একটি মন্তব্য করতে গিয়ে ভুল করে বসেছেন মুরাদ।
মন্তব্যে তিনি লিখেছেন, “ভুল করে সবাই নিজের ভুল মেনে নেয়ার সততা দেখায় না। আল্লাহ আপনাকে সঠিকভাবে ফিরিয়ে আনুন সকলের মাঝে।”
মুরাদের ওই মন্তব্যে অনেকেই হাসির ইমোজি দিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রযুক্তি সম্পাদক হাসান বিপুল বলেন, “এটা সত্যি যে ফেইসবুকে একই নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে, আছেও। তবে এই পোস্ট আর কমেন্টের ক্ষেত্রে সেটি অসম্ভব।
“কারণ, যে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটি দেওয়া হয়েছে, কমেন্টও করা হয়েছে সেই একই অ্যাকাউন্ট থেকে। এটি বুঝতে পারা কোনো জটিল বিষয় নয়। খেয়াল করে দেখুন, ওই পোস্ট ও কমেন্টের নিচেই একজন পাঠক কমেন্ট করেছেন- “এ দেখি নিজের সাথে নিজেই কথা বলে!”
রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মুরাদ হাসানের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজের ওই পোস্টে এক লাখ ১০ হাজার লাইক ও ৪৭ হাজার কমেন্ট পড়েছে। এটি শেয়ার হয়েছে চার হাজার।
‘কমেন্ট সেকশনে’ নানা রকম মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এতে তীব্র সমালোচনা যেমন আছে, তেমনি তার পক্ষেও কেউ কেউ কথা বলেছেন।
এক নায়িকার সঙ্গে টেলিফোন আলাপে অশালীন মন্তব্যের অডিও ফাঁস হওয়ার পর গত কয়েক দিন ধরেই তুমুল আলোচনা চলছে ডা. মুরাদকে নিয়ে। এর জেরে সোমবার তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ‘ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায়’ তিনি পদত্যাগ করতে চান।
কিন্তু ঘণ্টা দুই পর জানা যায়, ভুল থাকায় তা সংশোধন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘হার্ড কপি’ আকারে তা আবার জমা দিতে বলেছে।
পাঠানো পদত্যাগপত্রে মুরাদ লিখেছেন, তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মে। যদিও ওই দায়িত্বে তিনি এসেছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে।
জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান তালুকদারের ছেলে মুরাদ ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হন।
২০১৯ সালে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুরাদ। ওই বছর মে মাসে তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসনের এমপি। নিজের এলাকা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ‘স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক’ তিনি।
মন্ত্রীত্ব হারানোর পর তাকে এ পদ থেকেও অব্যাহতি দিতে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
আরও পড়ুন: