মঙ্গলবার সকালে আরামনগর বাজার ট্রাক মালিক সমিতির মোড় থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়, যার নেতৃত্বে দেখা যায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-আমিন হোসাইন শিবলুকে।
উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মিছিলকারীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। পরে সেখানে মুরাদ হাসানের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।
আল আমিন হোসাইন শিবলু সাংবাদিকদের বলেন, “মন্ত্রিত্বের দাপটে মুরাদ হাসান এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। তার নানা অপকর্মে আমরা লজ্জিত ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছি।”
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক। তাকে দলের ওই পদ থেকেও সরানোর দাবি উঠেছে ইতোমধ্যে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহামেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তাদের দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে মুরাদ হাসানের বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে ‘বর্ণ ও নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্যেরর কারণে মুরাদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনা চলছিল কয়েক দিন ধরে।
এর মধ্যে এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
জামালপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান তালুকদারের ছেলে মুরাদ ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হন।
২০১৯ সালে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মুরাদ। ওই বছর মে মাসে তাকে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের খবর আসার পর সোমবার রাতেই তারাকান্দি শহীদ মিনার চত্বরে আনন্দ মিছিল করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লোকজন পটকা ফুটিয়েও উল্লাস প্রকাশ করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, “এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে একজন তথ্য প্রতিমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন, তা দলের জন্য সত্যিই লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই।”
আরও পড়ুন