নিরাপদ সড়ক ও সারা দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘শর্তহীন’ হাফ পাসের প্রজ্ঞাপন জারিসহ নয় দফা দাবিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ করেছে একদল শিক্ষার্থী।
Published : 06 Dec 2021, 07:58 PM
বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কর্মসূচি থেকে শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলোকে নিয়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
নয় দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন আন্দোলনকারীরা।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইনজামুল হক রামিম বলেন, ৮ নভেম্বর থেকে ‘হাফ পাসের’ দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, ২৩ নভেম্বরে তা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে দানা বাঁধে।
“আমরা নয় দফা দাবি জানিয়েছি, সরকারের কেউ আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেয়নি। বরং আমাদের আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। আমরা তাদের কাছে এটা আশা করিনি।”
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী ঢাকায় রামপুরা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছে জানিয়ে রামিম বলেন, “বৈরী আবহাওয়ায় আমরা মোমবাতি জ্বালাতে পারি, কিন্তু সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “নয় দফা বাস্তবায়ন না করলে আমরা প্রয়োজনে অনশনে যেতে বাধ্য হব।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সব মহানগরেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাসে অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
তবে সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাসে অর্ধেক ভাড়া দিতে পারবে শিক্ষার্থীরা। সেজন্য যার যার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেওয়া ছবিসব পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বা সরকারি ছুটির দিনে অর্ধেক ভাড়া প্রযোজ্য হবে না।
মহানগর ছাড়া দেশের অন্য কোনো জেলা বা উপজেলায় কিংবা দূর পাল্লার বাসে হাফ ভাড়া নেওয়া হবে না।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সারাদেশে বাস, লঞ্চ ও ট্রেনেসহ 'নিঃশর্ত' হাফ পাসের দাবি তুলেছেন।
আন্দোলনকারীদের আরেক সমন্বয়ক মহিদুল হাসান দাউদ বলেন, শর্তসাপেক্ষে শুধু মহানগরে হাফ পাস নয়, সারা দেশে নিঃশর্ত হাফ পাসের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি হলো-
১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।
২. নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।
৪. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
৫. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।
৭. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে।
৯. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।