কেন্দ্রীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের জন্য নতুন একটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
Published : 19 Oct 2021, 06:53 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’ এর খসড়া সায় দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নতুন আইনে যাকাত যাকাত বোর্ডের প্রধান হবেন ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। যাকাত বোর্ডে সদস্য থাকবে ১০ জন।
“জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করে দেবে ইসলামি ফাউন্ডেশন বা ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে। কালেকশন ও ডিস্ট্রিবিউশনটা তারা করবেন। কাকে কাকে কীভাবে দেবে এটা তারা ঠিক করবে। তাদের একটি অ্যাকাউন্ট থাকবে, সেখান থেকে তারা সংগ্রহ করবে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনটিতে ১৪টি ধারা আছে। তিন নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকারিভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণ করা হবে এবং আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারিভাবে যাকাত দানে উদ্বুদ্ধকরণ। যাকাত সংগ্রহকেন্দ্র স্থাপন, যাকাত দানে আগ্রহী ব্যক্তিদের যাকাত যোগ্য সম্পদ ও প্রত্যয়ন প্রদান।
সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮২ সালের ৫ জুন জারি করা যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী এখন সরকারের যাকাত কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যাকাত ফান্ড রয়েছে, যার পরিচালনায় একজন বিশিষ্ট মুসলিম পণ্ডিতের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট যাকাত বোর্ড রয়েছে।
বোর্ডের সিদ্ধান্তগুলো সদস্য সচিব তথা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক যথানিয়মে বাস্তবায়ন করে থাকেন।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, জেলার বিত্তবানদের কাছ থেকে যাকাত হিসেবে সংগৃহিত মোট অর্থের অর্ধেক জেলা যাকাত কমিটির মাধ্যমে গরীব ও অসহায়দের মাধ্যে বিতরণ করা হয়। জেলা যাকাত কমিটি যাকাত আদায় ও বিতরণ কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
তাছাড়া আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির জন্য যারা যাকাত বোর্ড কার্যালয়ে আবেদন করে থাকেন, তাদের আবেদনসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা কর্তৃক যাচাই-বাছাই করে জেলা যাকাত কমিটির মাধ্যমেই বিতরণের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে অর্থ পাঠানো হয়ে থাকে।
যাকাত ফান্ডের একটা অংশ দিয়ে টঙ্গী যাকাত বোর্ড শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। এছাড়াও যাকাতের অর্থে বিভিন্ন জেলায় ২৪টি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালিত হয়। এছাড়াও যাকাতের অর্থ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মাকাণ্ডে ব্যয় করা হয়। যাকাতের অর্থ আয়কর মুক্ত।
ই-কমার্স
মন্ত্রিসভা বৈঠকে ই-কমার্স নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ই-কমার্স নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মিটিং করে পাঁচ সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি এক মাস সময় নিয়েছে, অল্প দিনে প্রতিবেদন দিয়ে দেবেন।
“আজকে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং সচিব বলেছেন তারা অনেক অগ্রসর হয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনটিএমসি সবাইকে নিয়ে। গত দুই আড়াই মাস থেকে একটা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আজকে এটাও সিদ্ধান্ত হয়েছে- এই জাতীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের যারা জড়িত তাদেরকে নিবন্ধনের মধ্যে মনিটরিং করতে হবে। কীভাবে করা হবে সেটাও আলোচনা হয়েছে।
“পেমেন্ট গেটওয়েগুলো সুপারভিশন করারও একটা মেকানিজম ডেভলপ করা হচ্ছে, যাতে রেজিস্টার্ড পেমেন্ট গেটওয়ের বাইরে কেউ অপারেট না করে।“
এছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ আইন ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদনও করে মন্ত্রিসভা।