ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলার আসামিরা আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
Published : 29 Aug 2021, 05:02 PM
এই মামলায় রোববার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল।
বিচারক বেগম কামরুন্নাহার পাঁচ আসামিকে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া সাক্ষ্যের মূল বিষয় পড়ে শুনিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করেন যে,তারা দোষী না নির্দোষ?
সাফাত আহমেদসহ সব আসামি নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন।
তারা বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে ঘটনার দিনের কিছু ছবি এবং লিখিত বক্তব্য তারা আদালতে জমা দেবেন।
আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতের সঙ্গে অন্য আসামিরা হলেন তার দুই বন্ধু সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম, সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী, গাড়িচালক বিল্লাল। তারা সবাই জামিনে রয়েছেন।
আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে আগামী রোববার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন রেখেছেন বিচারক।
আসামি পক্ষের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম লিটন, শাহিনূর ইসলাম অনি, মো. হেমায়েত উদ্দীন মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি প্রমাণ করতে পারছে না।
তারা বলেন, চিকিৎসা সনদে ধর্ষণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আর আসামিদের মধ্যে সাফাত এবং অন্যান্যরা ওই হোটেলের কক্ষে ঢুকেছেন, এমন ছবি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, ট্রাইবুনালের বিশেষ কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বলেন, “একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সিসিটিভি ফুটেজ অনুসন্ধান করে কোনো কিছু পাওয়া যায় না, সে কারণে তদন্ত কমকর্তার কোনো দোষ দিতে পারি না। দেখা যাক কী হয়।”
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় মামলাটি হয়।
ওই বছরের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পিয়াসার জামিন আবেদন নামঞ্জুর
রেইনট্রি মামলার আসামি সাফাতের সাবেক স্ত্রী মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার মাদকের মামলায় জামিন আবেদন নাকচ হয়েছে। ফলে তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য আইনে করা মামলায় রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
পিয়াসাকে গত গত ১ অগাস্ট রাতে ঢাকার বারিধারার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেদিন মোহাম্মদপুর থেকে আরেক মডেল মরিয়ম আক্তার মৌকেও আটক করা হয়।
তখন গোয়েন্দা পুলিশ বলেছিল, পিয়াসা ও মৌ বাড়িতে ‘পার্টি’ করে বিভিন্নজনকে আমন্ত্রণ জানাতেন, সেই ছবি তুলে রেখে পরে তাদের ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন।
সাফাতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হওয়ার কিছু দিন আগেই পিয়াসার সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়েছিল।
পিয়াসাকে গ্রেপ্তারের পর গুলশান, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মাদকের মামলা হয় ।
ওই সব মামলায় তাকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল সিআইডি। তারপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।