অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে গ্রেপ্তার রোজিনা ইসলাম ন্যায়বিচার পাবেন বলে সাংবাদিকদের নেতাদের আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
Published : 18 May 2021, 11:13 PM
স্বরাষ্ট্র এবং তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর মঙ্গলবার রাতে আইনমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান জাতীয় প্রেস ক্লাবের নেতারা।
তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি প্রসিকিউশনকে মামলাটা খতিয়ে দেখার জন্য বলব। ন্যায় বিচার অবশ্যই পাবে, এটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি।”
বৈঠকে প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় সোমবার গ্রেপ্তার করা হয় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনাকে। বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
নথি চুরির চেষ্টার অভিযোগ তুলে সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার কক্ষে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল রোজিনাকে; পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
রোজিনা নথি চুরির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার সহকর্মীরা বলছেন, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আক্রোশের শিকার হয়েছেন তিনি।
রোজিনাকে গ্রেপ্তারের পর দেশে ও বিদেশে সাংবাদিকদের নানা সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যে তার মুক্তির লক্ষ্যে মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করছেন সাংবাদিক নেতারা।
আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি সবই শুনেছি। আমি এটুকু বলব যে এ রকম একটা ঘটনায় সরকার ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুরত্ব সৃষ্টি হোক, এরকম কোনো কাজ, রকম যদি কোনো সন্দেহ থাকে, এটা দূরীকরণের জন্য সরকার চেষ্টা করে। আর এ ঘটনার যে তদন্তের কথা বলেছেন নিশ্চয়ই আলাপ-আলোচনা করব।”
মঙ্গলবার আদালতে নিয়ে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিতে পুলিশ আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেন বিচারক। তার জামিনের বিষয়ে আংশিক শুনানি শেষে বিচারক বাকি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ রেখেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন, আগামী পরশুদিন এটার জামিনের শুনানি রয়েছে। আদালত জামিনের শুনানি দেখবেন। নিশ্চয়ই আদালত সব কিছু বিবেচনা করবেন। আমি প্রসিকিউশনকে মামলাটা খতিয়ে দেখার জন্য বলব। ন্যায় বিচার অবশ্যই পাবে, এটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি।”
মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, “মাননীয় আইনমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব মন্ত্রী। তার প্রতি আমাদের ভরসা রয়েছে।
“আমরা দাবি করছি, মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তি দেওয়া হোক। আমরা চাই না সরকারের সঙ্গে গণমাধ্যমের কোনো মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হোক।”
এই ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইতোমধ্যে তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। আটকে থাকা অবস্থায় রোজিনা নির্যাতনের শিকার হননি বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তার ঘটনা তদন্ত করে এতে জড়িত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তি দাবি করেন।
তিনি একই সঙ্গে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে অন্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এর তদন্ত করতে হবে।
“এ ঘটনার জন্যে যারা দায়ী, ওই সময়ে তার উপর যেসব কর্মকর্তা নির্যাতন করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। সম্ভব হলে আইন মন্ত্রণালয়ের লোকজন দিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে।”