দেশ থেকে অর্থ পাচার বন্ধ এবং চলে যাওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেন দুর্নীতি দমন কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও কমিশনার মো. জহুরুল হক।
Published : 10 Mar 2021, 05:20 PM
তারা দুজন দুদকে যোগ দিয়ে বুধবার সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে একসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে আসেন।
যে অর্থ পাচার হয়েছে, সেগুলো ফেরত আনার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী কাজ করার কথা বলেছেন জহুরুল।
“অর্থ পাচারের ব্যাপারে হাই কোর্ট সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, আমাদের কাছে লিস্ট চাচ্ছে। আমরা লিস্টগুলো কোয়ারি করবো, খুঁজব, দেখব। তারপর কোর্টকে জানাব। কোর্ট যে অ্যাকশন নিতে বলবে, সেই অ্যাকশন নেব।”
বিদেশে পাচার হওয়ার অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন বলেন, “সব কিছুর একটা পদ্ধতি থাকে। পদ্ধতি অনুযায়ী, আইন অনুযায়ী যতখানি সুযোগ রয়েছে, সেটা করার চেষ্টা করব।”
আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করেই দুর্নীতি কমাতে পারবেন বলে আশাবাদী নতুন চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে আমাদের, যা দিয়েই দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের যতগুলো আইন আছে প্রতিটি আইনই দুর্নীতি যাতে না হয় সেটা অন্তর্ভুক্ত আছে।
“আমার প্রত্যাশা থাকবে সবগুলো আইনের মাধ্যমে দুর্নীতি যাতে কম হয় বা নিশ্চিহ্ন করা যায় সেই উদ্দেশ্যে থাকবে।”
দুর্নীতির বিপক্ষে সবার অবস্থান হলেও বিশ্বের সব দেশেই কম-বেশি দুর্নীতি থাকার বাস্তবতাটি তুলে ধরেন মঈনউদ্দীন।
“আমাদের লক্ষ্য থাকবে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত দেশ বা সমাজ গড়ার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যতখানি আমরা অভীষ্ঠ লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি, সেটাই আমাদেরে উদ্দেশ্যে থাকবে।"
দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের কাজে দীর্ঘসূত্রতা কমাতে কোনো উদ্যোগ থাকবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের চেষ্টা থাকবে কোনো কোনো অনুসন্ধান বা তদন্তে যে দীর্ঘসূত্রিতা আছে, তা যতখানি সম্ভব তা কমিয়ে আনব।”
প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধে আগের কমিশনের করা বিভিন্ন সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার যেন উদ্যাগ নেয়, সেই বিষয়ে নতুন কমিশনও কাজ করবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন সচেষ্ট থাকবে বলে জানান মঈনউদ্দীন।
কেবল আইন দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
“আমরা কেউ চাই না যে সমাজে দুর্নীতি থাকুক। আমাদের কর্মকাণ্ডেও যেন সেটা থাকে। সবাই সবার অবস্থান থেকে দুর্নীতি দমনে আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। বিশেষ করে গণমাধ্যম। আপনারা সমাজের দর্পন।”
জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে এই কমিশন কী ধরনের ভূমিকা রাখবে- এমন প্রশ্নের জবাবে নতুন চেয়ারম্যান বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা যা, জাতির আকাঙ্ক্ষা যা তা পূরণে এই কমিশনের চেষ্টা থাকবে। আমাদের উদ্দেশ্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। এসব বিষয় নিয়ে আমরা কমিশনে আলোচনা করব। আশা করি সেটাই আমরা করার চেষ্টা করব।”
কমিশনার জহুরুল বলেন, “দুই-চার মাস গেলেই বুঝতে পারবেন যে এই কমিশন যথেষ্ট অ্যাকটিভ। দুর্নীতি একশভাগ বন্ধ হবে না, তবে কমানোর চেষ্টা করব।”