সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বনানী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে।
Published : 04 Mar 2021, 06:51 PM
মুজিবনগর সরকারে দায়িত্ব পালনকারী এইচ টি ইমাম দেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
৮২ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগে বৃহস্পতিবার মারা যান এইচ টি ইমাম।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ঘুরিয়ে এনে বিকালে গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজার পর এইচ টি ইমামের মরদেহ নেওয়া হয় বনানী কবরস্থানে।
সেখানে ‘গার্ড অফ অনার’ দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সন্ধ্যায় তাকে দাফন করা হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
এর আগে সকালে হেলিকপ্টারে উল্লাপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয় এইচ টি ইমামের কফিন। সেখানে উল্লাপাড়া আকবর আলী সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা হয়।
সেখান থেকে বেলা দেড়টার দিকে মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনা হয়। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী কফিনে ফুল দেন।
এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষ থেকে সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস কমোডর এমএম নাঈম রহমান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করা এইচ টি ইমাম ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
হোসেন তৌফিক ইমামের জন্ম ১৯৩৯ সালে, পরে তিনি এইচ টি ইমাম নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন।
বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। ম্যাট্রিক পাস করেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে পাস করেন ইন্টারমিডিয়েট।
রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি নিয়ে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেন। তখন তিনি বাম ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন।
পড়াশোনা শেষে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন এইচ টি ইমাম রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে। এরপর পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন লন্ডনের স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবও হন।
অবসর নেওয়ার পর আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন এইচ টি ইমাম। দলের নির্বাচন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন, যে কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা।