বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের অর্থ দিয়ে হাওর এবং প্রত্যন্ত, অনগ্রসর ও দুর্গম এলাকার ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাশরুমকে ডিজিটাল ক্লাশরুমে রূপান্তর করা হচ্ছে।
Published : 07 Jan 2021, 08:03 PM
বৃহস্পতিবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের টেলিকম অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তি অনুযায়ী এই প্রকল্প দিয়ে সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটালকরণের যাত্রা শুরু হবে। টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্প দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রকল্পের আওতায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ক্লাশরুম ডিজিটাল হবে। এর মধ্যে ৩০টি স্কুলে শিশুরা বইবিহীন বা অনলাইনে ট্যাবে লেখাপড়া করতে পারবে। তাদের ক্লাশে ডিজিটাল টিভি, আইপিএস ও ইন্টারনেট থাকবে। তাদেরকে ২০২০ সালে ইনটেলের সাথে উইটসা পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিজিটাল কনটেন্ট দিয়ে পাঠদান করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিভাইস ও ইন্টারনেট থাকলে শিশুরা বাড়িতে বসে বা অনলাইনে ক্লাশ করতে পারবে। বেসরকারিভাবে ২০১৫ সালে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেশে চালু হলেও সরকারিভাবে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে পাঠ্য বিষয়ের সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন করে ডিজিটাল যন্ত্রের সহায়তায় শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন এই প্রথম।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা আনন্দময় করতে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা পাঠ্যক্রম আবশ্যক। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই।”
শিশু বয়সকে সৃজনশীলতা ও মেধা অর্জনের সঠিক সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে একদিন ট্যাব বা ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে যাবে এবং সেই দিন ‘খুবই কাছে’।
মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল শিক্ষাকে প্রাথমিক শিক্ষার মূল স্রোতধারায় সংযুক্ত করতে ২০১৫ সাল থেকে তার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে আইসিটি বিভাগ থেকে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও নানা প্রতিকূলতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। দুর্গম অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত অসহায় শিশুদের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলের মাধ্যমে গৃহীত উদ্যোগ শিক্ষার রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মাইল ফলক।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, “করোনাকালে অচল জীবনধারা সচল রাখার পাশাপাশি ঘরে বসে শিশুরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণ ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বড় দৃষ্টান্ত। ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারে আমরা পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই।”