যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের একটি নতুন ধরন ছড়াতে থাকায় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধের ঘোষণা দিলেও বাংলাদেশ এখনও সেরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক।
Published : 22 Dec 2020, 01:53 PM
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছি, সময় মত সিদ্ধান্তটা সবাইকে জানিয়ে দেব।”
গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের ‘অত্যন্ত সংক্রামক’ ওই নতুন ধরনটির সন্ধান মেলে, যা এখন লন্ডনসহ ইংল্যান্ডের বেশ কিছু এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসের ওই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসেও পৌঁছে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় প্রতিবেশীসহ ৪০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
সে বিষয়ে একজন সাংবাদিক সচিব মহিবুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ যেমন করছি, পর্যালোচনাও করছি। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তটা খুব দ্রুত জানাব।”
বাংলাদেশ এখনও কোনো দেশের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, “কিছু দেশ যেহেতু আমাদের এক্সেস দিচ্ছে না, সে কারণে আমাদের বিমান যেতে পারছে না। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে (ফ্লাইট) বন্ধ করিনি, তারা তাদেরটা বন্ধ করেছে বলে আমাদের বিমান যেতে পারছে না।”
সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশি যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে এক প্রশ্নে মহিবুল বলেন, “বিভিন্ন দেশে যে সমস্ত ফ্লাইটগুলো বন্ধ হয়েছে, যাত্রীদের ভোগান্তি হয়েছে, আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কারণ এটা তো আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত।
“আমরা যেটা করতে পারি, তাদের কোনো রকম ফি ছাড়াই, যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, আমরা এই টিকিটটা রি-ইস্যু করে দেব তাদের। তখন তারা কোনো রকম বাড়তি পয়সা ছাড়াই আবার যেতে পারবে।”
অতীতের মত যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ বিমানের এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন বিমান সচিব।
তিনি তথ্য দেন, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিমানের তিন হাজার কোটি টাকা এবং পর্যটন খাতে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
“সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশেও করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেক খাতে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। একক মন্ত্রণালয় হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের। আমাদের বিমান, এয়ারপোর্ট, পর্যটন, হোটেল, মোটেল, রিসোর্টসহ সকল কিছু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
সচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে চলে আসছিলাম। আমাদের বিমানবন্দর, হোটেল-মোটেল, রিসোর্টগুলো খুলে দিয়েছি।”
সোমবার পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৯টি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে যাত্রীবাহী ফ্লাইটের সংখ্যা ছিলো ১৯৮টি, আর কার্গোবাহী ফ্লাইট ছিল ৭৪টি।