বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ দশ আসামির বিচার হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আদালত দেবে ২৭ অক্টোবর।
Published : 13 Oct 2020, 09:23 PM
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মঙ্গলবার এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ঠিক করে দেন।
মতিউর রহমানের পক্ষে এদিন অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
অপর আসামিরা হলেন- প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহপরাণ তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার। তাদের পক্ষে অব্যাহতি চান আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো।
শুনানিতে সমাজী বলেন, “একই অপরাধ সম্পর্কে নালিশি মামলা ও পুলিশি তদন্ত চলতে থাকলে যে নিয়ম অনুসরণ করতে হয় ঢাকার সংশ্লিষ্ট মহানগর হাকিম তা লঙ্ঘন করেছেন।”
আর আইনজীবী টিটো বলেন, “আনিসুল হকসহ অন্য আসামিদের কাছে আবরার রাহাতের (বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার) ঘটনা জানানোর পরও কেউ কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ এ মামলায় যে ৩২ জন ১৬১ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা কেউ এ কথা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি।”
এ সময় আসামিপক্ষের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন বাদীর ব্যক্তিগত আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ। আর রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী তাপস পাল।
মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে গতবছর ১ নভেম্বর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার রাহাত। মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোর প্রকাশক; আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলো সম্পাদকসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা করেন।
তদন্ত শেষে গত ১৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম।
সেখানে মোট দশজনকে আসামি করে বলা হয়, নাইমুল আবরারের মৃত্যুর পেছনে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের ‘অবহেলার প্রমাণ’ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে বলা হয়, অনুষ্ঠানের জন্য যে বিদ্যুৎসংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল, তা ‘অরক্ষিত’ ছিল। ঘটনাস্থলের খুব কাছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থাকলেও আবরারকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক কায়সারুল ইসলাম সেদিনই অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তাদের সবাই আদালত থেকে জামিন নেন।
মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে নথিপত্র মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
এরপর গত ১ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ আসামিদের উপস্থিতিতে পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ১৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ রাখেন।