বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে, মাল্টিমোড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাফসির আউয়ালকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
Published : 10 Sep 2020, 07:32 PM
নিউ ইয়র্ক ও লন্ডনে একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলে নিজের মালিকানাধীন কোম্পানির কোটি কোটি টাকা লেনদেনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় বলে দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে তাফসির বলছেন, পারিবারিক বিরোধের কারণে একটি পক্ষ থেকে ভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে বার বার তাকে দুদকে তলব করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল তাফসিরকে দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এর আগে গত ৩১ অগাস্ট প্রথম দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাফসির সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমার একটা পারিবারিক বিরোধ আছে। দুদক এই পারিবারিক বিরোধের বিষয় হয়ত অবগত নয়। এজন্য বারবার ডাকছে। যা যা জানতে চেয়েছে, আমি বলেছি।”
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আউয়াল মিন্টুর দ্বিতীয় ছেলে তাফসির যুক্তরাজ্যে পড়াশুনা করেন। তিনি বিয়ে করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর মেয়েকে।
সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে বলে পারিবারিক সূত্র জানায়। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। তার অভিভাবকত্ব নিয়ে মা-বাবা দুজনে লন্ডনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
দুদকের নোটিস পেয়েই লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন বলে জানান তাফসির।
তাফসিরের বাবার মতো তার ভাই তাবিথ আউয়ালও বিএনপিতে সক্রিয়। তিনি দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। বিএনপির মনোনয়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্য বিএনপির কোনো রাজনীতিকের কাছে অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগ পেয়ে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তাফসির বলেন, “আমি আসলে রাজনীতি করি না। রাজনীতির সঙ্গেও নেই। তারপরও কেন বারবার তলব করছে, আমি জানি না।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যে সব অভিযোগের বিষয়ে দুদক নথিপত্র চেয়েছে সেগুলো আমরা জমা দিয়েছি। বাকি বিষয়ে আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) দুদকের কাছ থেকে জানতে পারেন।”
তাফসিরের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক ও লন্ডনে একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআইএফআইউ থেকে বেশ কিছু রেকর্ডপত্র চেয়ে এর আগে চিঠি দিয়েছিলেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
চিঠিতে আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও তার সন্তানদের নামে বিদেশি কোম্পানি এনএফএম এনার্জির নামে যুক্তরাজ্যের বার্কলেস ব্যাংক লন্ডন শাখা, যুক্তরাষ্ট্রের জেপি মর্গান চেজ ব্যাংকের নিউ ইয়র্ক শাখা ও পিএনসি ব্যাংকের পিটাসবার্গ শাখার কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য, থাইল্যান্ডের সুকুমভিত রোডে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট কার নামে নিবন্ধিত, কত টাকায় কেনা হয়েছে, কীভাবে অর্থ পরিশোধ হয়েছে এবং বারমুডায় নিবন্ধিত ‘এনএফএম এনার্জি লিমিটেড’ নামীয় প্রতিষ্ঠান (যার শেয়ারধারী হিসেবে আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল) সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়।
এছাড়া বিআইএফইউতে দেওয়া চিঠিতে সিঙ্গাপুরের যৌথ মালিকানায় নিবন্ধিত এনএফএম এনার্জি সংক্রান্ত ও বিনিয়োগের তথ্য চাওয়া হয়।