করোনাভাইরাস মহামারীতে যেসব তরুণ কর্মী ও উদ্যোক্তা কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন, তাদের জন্য যাতে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেবেন আশ্বাস দিয়েছেন সরকারের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীরা।
Published : 05 Sep 2020, 12:55 AM
শুক্রবার রাতে ইয়াং বাংলা আয়োজিত ‘লেটস টক’র দ্বিতীয় পর্বে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় তরুণদের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনায় এ আশ্বাস দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এই আলোচনায় আরও যোগ দেন সমাজকল্যাণ সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী, জাগো ফাউন্ডেশনের করভী রাখসান্দ, ইয়াং বাংলার ইশরাত ফারজানা তন্বী, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী কামরুন নেসা মিরা এবং ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের রাফি হক অন্তর।
তরুণদের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের প্রতিনিধি হিসেবে ইশরাত ফারজানা তন্বী ক্ষতিগ্রস্ত তরুণদের জন্য বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। তার সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, জাতীয় যুব কাউন্সিলে তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, ন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে বিশদ পর্যালোচনায় তরুণদের পরামর্শ গ্রহণ, তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রণোদনা ও স্বীকৃতি প্রদান, সামাজিক উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার জন্য জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ।
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় স্যোশাল সেইফটি নেট ম্যানেজমেন্ট, দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি বেইজড স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম, ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রামগুলোতে তরুণদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।
ইশরাত ফারজানা তন্বী বলেন, “স্থানীয় ও রপ্তানি আয় বাড়াতে যেসব প্রকল্প রয়েছে সেখানে তরুণদের সুযোগ বাড়াতে হবে।”
দেশে এখন কতজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন বা কতটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার তালিকা প্রণয়নের পাশাপাশি তরুণদের স্বার্থ রক্ষায় একটি সায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থাকা উচিৎ বলেও মনে করেন তরুণরা।
“দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ তরুণ। তাদের জন্য আমাদের নতুন করে কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। স্থানীয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাজগুলোতে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে তরুণদের কাজের সুযোগ দেওয়া যায়। আমাদের তো কোভিড-১৯ কে সাথে নিয়ে অনেক পথ চলতে হবে। যুব শক্তিকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এদের সহযোগিতা করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই।”
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জয়নুল বারী বলেন, “সিটি করপোরেশন ও শহর এলাকাগুলোতে আমাদের আরবান কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট রয়েছে। সেখানে নানা প্রকল্পে তরুণদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা নানা প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকি। তরুণরা তা নিয়ে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারেন।
“পাশাপাশি আমরা যদি যুবকদের মাঠ পর্যায়ে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে পারি তাহলে আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সঠিকভাবে নির্বাচন করতে পারব।”
শুক্র থেকে রবি এই তিন দিনে ‘লেটস টকের’ সাতটি পর্ব হবে। আয়োজনের তৃতীয় দিন সমাপনী পর্বে বক্তব্য দেবেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) দূত সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।
দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন গড়ে দিতে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াং বাংলা ‘লেটস টক’ শিরোনামে এ আয়োজন করে আসছে। ২০১৮ সালের ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নিজের ভাবনা তরুণদের সাথে ভাগাভাগি করতে।
লেটস টকে এর আগে বেশ কয়েকটি পর্বে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।