সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খানকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাংবাদিকসহ সাহিত্যিকরা।
Published : 29 Aug 2020, 01:49 PM
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাহাত খানের কফিন নিয়ে যাওয়া হয় তেজগাঁওয়ে প্রতিদিনের সংবাদ কার্যালয়ে।
বাদ জোহর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
দীর্ঘদিন দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করা রাহাত খান ৮০ বছর বয়সে শুক্রবার মারা যান।
শনিবার সকাল ১১টায় তার মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবের আনা হলে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রেস ক্লাবের সামনের প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা জানানোর আগে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “কথাসাহিত্যিক রাহাত খানের হঠাৎ চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
“একজন প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মানুষ, আজীবন প্রগতির পক্ষে, আজীবন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলেছেন, কলম ধরেছেন। তার এই মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”
বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাহাত ভাই সাহিত্যের প্রতি নিবেদিত একজন মানুষ ছিলেন। জীবিকার তাড়নায় তিনি সাংবাদিকতা করতেন। অধ্যাপনা দিয়ে তিনি জীবন শুরু করেছিলেন। কিন্তু অধ্যাপনা পেশার সঙ্গে লেখালেখিকে মিলিয়ে তিনি জীবন ধারণে অস্বচ্ছলতা আসছিলো বলেই তিনি সাংবাদিকতায় আসেন।”
তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পর নতুন ধারার সাহিত্য নিয়ে, নতুন ধারার গল্প্-উপন্যাস নিয়ে যে ক‘জন আমাদের বাংলাদেশের সাহিত্যে আবির্ভূত হন রাহাত খান তার অন্যতম। রাহাত খানের সাহিত্য বিবেচনা কেবলমাত্র তখনই করা সম্ভব হবে যখন পরিপূর্ণভাবে একজন রাহাত খানকে পাঠ করা হবে।”
সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “তিনি ছিলেন সাংবাদিক ও সম্পাদক। সুস্থ সাংবাদিকতা, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা এবং সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠতা ও নীতিনৈতিকতা মেনে এই সাংবাদিকতা পেশা করা সেটি ছিলো তার দৃঢ়চিত্তের প্রতিজ্ঞা।
“সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি আমাদের সাহিত্য জগতে অন্যন্য একটি স্থান করে নিয়েছেন। তার কীর্তির মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহাও প্রয়াতের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরীর পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী ও প্রয়াত রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান।
জানাজার পর প্রয়াত সাংবাদিকের কফিনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের যুগ্ম সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফুল দেন। এসময়ে কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল, বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
পরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্মচারী ইউনিয়ন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, উদীচীসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয় রাহাত খানের কফিনে।