দুদকের মুখোমুখি স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আজাদ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 06:02 AM
Updated : 12 August 2020, 06:26 AM

দুদকের তলবে বুধবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার সেগুনবাগিচায় কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হন ডা. আজাদ। পরে দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

দুদক বলছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরস্পর যোগসাজশে ‘অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য ‘নিম্নমানের’ মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনে বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে কমিশনের হাতে।

এসব অভিযোগের অনুসন্ধানে গত ১৫ জুন দুদক কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন শিবলীকে প্রধান করে চার সদস্যের এই অনুসন্ধান টিম গঠন করে কমিশন।

অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) এক উপ-পরিচালকসহ তিন কর্মকর্তাকে গত ২০ জুলাই দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এরপর গত ৬ অগাস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদকে তলব করে চিঠি পাঠায় দুদক।

দুদক কার্যালয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ

এছাড়া করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার বিষয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাকে বৃহস্পতিবার আবারও কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।

রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (ওএসডি) ডা. মো. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক মো. ইউনুস আলীকে বুধবার দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলামও তলবের চিঠি পেয়ে দুদকে উপস্থিত হয়েছেন। তাকে দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন ডা. আজাদ।

শুরুটা হয়েছিল চিকিৎসকদের নিম্ন মানের মাস্ক সরবরাহ দিয়ে। এরপর রিজেন্ট হাসপাতাল, জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতি ফাঁস হওয়ার পর তোপের মুখে পড়েন তিনি।

কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় গত ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তখনকার মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর আবার রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের খবর পেয়ে র্যাব গত ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়।

তখন জানা যায়, হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ ছিল না জেনেও রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করার পর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হওয়া চুক্তির নথিপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে দুদক।

পুরনো খবর