জেএমআই চেয়ার‌ম্যান, তমার সমন্বয়ককে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারীকে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2020, 12:51 PM
Updated : 8 July 2020, 12:51 PM

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জেএমআইর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারী (মেডিকেল টিম) মো. মতিউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে ‘এন-৯৫’ লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক।

রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক দেওয়ার ঘটনায় তোপের মুখে পড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার।

রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও ভুল মাস্ক সরবরাহে নাম আসে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সরবরাহ করা এন-৯৫ মাস্কের কয়েকটি চালান পরীক্ষা করে যত সংখ্যায় থাকার কথা ছিল তার চেয়ে কম পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জেএমআই চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য তারা (দুদক) আমার বক্তব্য নিয়েছেন। আমি যা বলার তাদের কাছেই বলেছি।”

আর তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারী মতিউর রহমান বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ছিল তিন লাখ মাস্ক সরবরাহ করার। এগুলো করা হয়েছে। সেখানে ৬০টির মত মাস্ক কম হয়েছে। এটা কোনো কারচুপি বা অনিয়ম না।”

তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, “করোনাভাইরাসের মধ্যে মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য জিনিসপত্র সরকারের বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করার ক্ষেত্রে যে চুক্তি ছিল সেখানে দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। এই সব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। কারা কারা এসব দুর্নীতি-অনিয়মের সাথে জড়িত তাদেরকে বের করার জন্যই এই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।”

এর আগে অনুসন্ধান দলের প্রধান দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল জেএমআই হাসপাতাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমেটেডের চেয়ারম্যান ও তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

অনুসন্ধান দলের অপর তিন সদস্য হলেন- কমিশনের উপ-পরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান।

একই অভিযোগে বুধবার এলান করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিনক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিনি দুদকে আসেননি।

এর আগে গত ১ জুলাই ওই তিনজনসহ পাঁচজনকে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আসতে নোটিস দিয়েছিল দুদকের এই অনুসন্ধান দল।

অপর দুইজন মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির এবং ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের মালিক মো. মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে ৯ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ১৫ জুন জয়নুল আবেদীন শিবলীকে প্রধান করে চার সদস্যের এই অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক।