সাড়ে ছয় বছর আগে থানায় নিয়ে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে ভার্চুয়াল আদালতে।
Published : 11 Jun 2020, 08:25 PM
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (ভার্চুয়াল আদালত) আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে জামিনের আবেদন করেন জাহিদের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ।
কাশিমপুর কারাগারে কোভিড-১৯ সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে এমন যুক্তি দেখিয়ে জামিন চাওয়া হয়।
শুনানি শেষে বিচারক এই জামিন আবেদন খারিজ করে দেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ।
বিচারক বলেন, যথেষ্ট কড়া নিরাপত্তা রয়েছে যাতে করে কোভিড সংক্রমণ কারাগারে না হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সাভির্সেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) মনোনীত বাদীর ব্যক্তিগত আইনজীবী আবু তৈয়ব।
আলোচিত এ মামলায় অন্য আসামি পুলিশের সোর্স সুমনের পক্ষে গত ২৫ মার্চ যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ছিল।
মামলাটিতে এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জন সাক্ষীর বক্তব্য শুনেছেন বিচারক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে চলে যেতে বলেন। সুমন চলে গেলেও পরদিন এসে আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকেন। তখন জনি ও তার ভাই তাকে চলে যেতে বললে সুমন পুলিশকে ফোন করেন; পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে যায়।
পরে থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে জনির অবস্থা খারাপ হলে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জনির শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ অগাস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি।
ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, সোর্স সুমন ও রাশেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।
মামলার আসামিরা হলেন- পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান খান, এসআই রাশেদুল ইসলাম, এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন।
এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে আছেন। অপর তিন আসামি জামিনে আছেন।
অন্যদিকে ২০১৪ সালের ১৩ জুলাই রাতে মিরপুর থানা হেফাজতে ঝুট ব্যবসায়ী সুজনের মৃত্যুর ঘটনাতেও প্রধান আসামি এস আই জাহিদ।
একই আদালতে সে মামলার বিচারও চলছিল; যে বিচার এখন হাই কোর্টে স্থগিত রয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ইমতিয়াজ হোসেন রকি।
মিরপুর থানার তৎকালীন এসআই জাহিদের সঙ্গে এএসআই রাজ কুমার, কনস্টেবল আসাদ, রাশেদুল ও মিথুন এই মামলার আসামি।