লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে করা মামলার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
Published : 03 Jun 2020, 06:24 PM
এরা হলেন- ঢাকার শহীদ তাজউদ্দিন সরণির ট্র্যাভেল এজেন্সি নাভীরা লিমিটেডের মালিক শেখ মো. মাহবুবুর রহমান (৪৯) ও হাতিরঝিলের ফ্লাইওভার ট্যুরস অ্যান্ড ট্র্যাভেলস লিমিটেডের মালিক শেখ সাহিদুর রহমান (৪০)।
বুধবার তাদের ঢাকার মুখ্য মহানগর মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের হেফাজত চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মিজানুর রহমান। অন্যদিকে তাদের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন আইনজীব সাইফুল ইসলাম সুমন ও কামাল হোসেন।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন তাদের চার দিনের হেফাজতে নেওয়ার আদেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই প্রণয় সরকার জানান।
তবে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে এই দুই সহোদরকে কোথা থেকে কখন গ্রেপ্তার করা হয় তা জানা যায়নি।
এসআই প্রণয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিরা লিবিয়ায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে কাউকে বিদেশে পাঠাননি দাবি করে তাদের পক্ষে জামিন চাওয়া হয়।
“এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাদের পলাতক সহযোগীরা কোথায় রয়েছে তা জানার জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
গত ২৮ মে লিবিয়ার ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাতে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে পাচারকারীরা। ওই ঘটনায় চার আফ্রিকান অভিবাসীও নিহত হন।
ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজনের বরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উন্নত জীবিকার সন্ধানে ইউরোপ যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছিলেন ৩৮ বাংলাদেশি। বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে মানবপাচারকারীরা তাদের ত্রিপোলি নিয়ে যাচ্ছিলেন।
বৃহস্পতিবার মিজদাতে ওই দলটি লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়। তখন পাচারকারীরা আরও টাকা দাবি করে। এ নিয়ে বচসার মধ্যে আফ্রিকার মূল পাচারকারীকে মেরে ফেলা হলে তার পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৩০ জনকে হত্যা করে, আরও ১১ জন আহত হন।
এঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৩৫ জনকে আসামি করেন রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করেন সিআইডির এসআই রাশেদ ফজল।
এই ঘটনায় ঢাকায় দুদিন আগে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কামাল হোসেন ওরফে হাজী কামালের (৫৫) সঙ্গে এই দুই সহোদরকেও আসামি করা হয়।
হাজী কামালকে পাসপোর্ট আইনের মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার অপর একজন মহানগর হাকিম কারাগারে পাঠিয়েছেন। তাকে মানবপাচারের মামলায় এখনও আদালতে হাজির করা হয়নি।