নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পের যেসব চীনা কর্মী দেশে গেছেন, তাদের ছুটি প্রলম্বিত হলে প্রকল্পের অগ্রগতিতে সমস্যা হতে পারে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Published : 05 Feb 2020, 02:25 PM
তবে উড়াল সড়ক, বাস র্যাপিড ট্রানজিট ও মেট্রোরেল প্রকল্পে চীনা নাগরিকরা কর্মরত রয়েছে এবং করোনাভাইরাস এসব প্রকল্পের অগ্রগতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর প্রধান এবং প্রকল্প পরিচালকদের নিয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালাচনা ও নাগরিক সেবা প্রদান বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
পদ্মা সেতুর অগ্রগতির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সেতুর সব মিলিয়ে অগ্রগতি ৭৭ শতাংশ, মূল সেতু ৮৬ শতাংশ এবং ২৩টি স্প্যান বসেছে।”
প্রকল্পে চীনা নাগরিকদের পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এখানে চীনা নাগরিক বর্তমানে ৯৮০ জন কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে থেকে বাইরে (ছুটিতে) আছে ৩৩২। তিমধ্যে ছুটি থেকে ফিরে এসেছে ৩৩ জন। ৩৩ জনের মধ্যে আটজন কোয়ারেন্টাইন মুক্ত, বাকিরা কোয়ারেন্টাইনে আছে।
“যদি আগামী দুই মাসের মধ্যে এই অচলাবস্থার (করোনাভাইরাস) অবসান হয় তাহলে আমাদের আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের কাজ চলতে থাকবে যদি না এর মধ্যে ছুটি প্রলম্বিত হয়। তারা নববর্ষের ছুটিতে গেছে। আগামী ১০ তারিখে ২৪ নম্বর স্প্যান বসবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে পদ্মার কাজের অগ্রগতিতে কোনো সমস্যা নেই।”
বাইরে থাকা চীনাদের ছুটি দুই মাসের বেশি হলে সমস্যা হবে কিনা এবং বিকল্প কোনো ব্যবস্থায় কাজ করা হবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “দুই মাসের বেশি হলে কিছু সমস্যা হবে। চুক্তি যাদের সাথে তারা বিকল্প কোথা থেকে দেবে? মাস দুয়েকের মধ্যে অসুবিধা হবে না।
“ওদের অনুপস্থিতিতে সমস্যা হচ্ছে না, সমস্যা হবে দুই-আড়াই মাস পরে। জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি না হলে সব কয়টি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে পদ্মা সেতুতে।”
পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে মাওয়া ও জাজিরা অ্যাপ্রোচ রোড সম্পূর্ণ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছে।
চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে। আর প্রকল্পের নদী শাসনের কাজ করছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন।
উড়াল সেতুর অগ্রগতি নিয়ে কাদের বলেন, “এখানে ফান্ড সমস্যা এখন আর নেই। প্রথম ফেইজের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ। এখানে চাইনিজ আছে ২০ জন, ছুটিতে আছে ১৮ জন এবং মোট কর্মরত ৩৮ জন। এখানে আপডেট হচ্ছে ছুটিতে থাকা চাইনিজদের জন্য কোনো অসুবিধা হচ্ছে না বা হবে না।”
বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পে ৭২ জন চীনার মধ্যে একজন ছুটিতে রয়েছে। এখানে সেতু বিভাগের অংশে অগ্রগতি ২০ শতাংশ বলে জানান মন্ত্রী।
মেট্রো রেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪২ শতাংশ জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, “উত্তরা থেকে আগারগাঁও ৬৮ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে কাজ ৩৬ শতাংশ হয়েছে। এখানে চীনা নাগরিক আছে ৫৮ জন, চীনে গেছে ৩১ জন। ফেরত এসেছে একজন, তিনি কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এখানে কোনো ইম্প্যাক্ট পড়বে না।”
সড়ক ও জনপথে যেসব ঠিকাদার সময়মত কাজ শেষ করবে না এবং কাজ শুরু করতে গড়িমসি করবে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।