ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি দেখছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ

হাসপাতালে প্রতিদিন নতুন ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এখনও হাজারের নিচে না নামলেও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিসক অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ গত দুই সপ্তাহের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে উন্নতির লক্ষণ দেখছেন।

মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১২৯৯ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।   

এর আগে গত ২১ অগাস্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬২৬ জন। এরপর থেকে ওঠানামার মধ্যে দিয়েই তা কমতির দিকে।

অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা ইতিবাচক। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমছে। এটাকে তুলনামূলক উন্নতি বলা যেতেই পারে। এভাবে চলতে থাকলে আশা করা যায় যে ডেঙ্গু কমে আসবে।”   

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের হিসাব অনুয়ায়ী, বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ৬৬ হাজার ৬৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরে গেছেন।

মঙ্গলবারও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫ হাজার ৩২২ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৯৯৯ জন। আর ২ হাজার ৩২৩ জন ভর্তি আছেন রাজধানীর বাইরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে।   

ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ১৭৩ জনের মৃত্যুর তথ্য আইইডিসিআরের হাতে এসেছে। তার মধ্যে ৮৮ জনের মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করে ৫২ জনের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২৩ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে আইইডিসিআরয়ের কাছে। তার মধ্যে, আটটি পর্যালোচনা করে তিনজনের মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে। তার মধ্যে চারটি পর্যালোচনা করে চারজনের মৃত্যুই ডেঙ্গুতে বলে নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাওয়া ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য থেকে তিনটি পর্যালোচনা করে একজনের মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞরা।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের দুজনের মৃত্যুর তথ্য থেকে দুটি পর্যালোচনা করে দুজনেরেই মৃত্যু ডেঙ্গুতে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এ পর্যন্ত পাওয়ার তথ্যের মধ্যে ডেথ রিভিউ প্রক্রিয়া শেষে স্কয়ার হাসপাতালে সর্বোচ্চ ১০ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর তথ্য আইইডিসিআর নিশ্চিত করেছে।  

এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঁচজন, আজগর আলী হাসপাতালে চারজন, ইবনে সিনা হাসপাতাল, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ও বিআরবি হাসপাতালে তিনজন করে, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল ও অ্যাপোলো হাসপাতালে দুজন করে এবং বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল, ডেলটা মেডিকেল কলেজ ও আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গুতে মারা গেছে বলে সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর বাইরেও ঢাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর বাইরে ঢাকা জেলায় একজন এবং খুলনায় দুজন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন বলে আইইডিসিআর নিশ্চিত হয়েছে।

তবে বিভিন্ন হাসপাতাল ও জেলার চিকিৎসকদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১৮২ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।