“দখলদার শক্তির হাত থেকে আমরা ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা চাই, স্বাধীনতা চাই,” বলেন সাদ্দাম হোসেন।
Published : 06 May 2024, 04:39 PM
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা, ব্যানার ও প্লাকার্ড হাতে নিয়ে সংগঠনটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী পদযাত্রা বের করে।
সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর, ফুলার রোড দিয়ে শহীদ মিনার হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘স্টপ জেনোসাইড’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক-ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘জয় জয় ফিলিস্তিন’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি-প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ এমন নানা স্লোগান দেন।
একই সময় সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পদযাত্রা ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের জন্য যারা অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে, ইতিহাসের কী অমোঘ পরিণতি- সেখান থেকে দুর্বার প্রতিবাদের জয়োধ্বনি তৈরি হয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিপক্ষে সিকিউরিটি কাউন্সিলে ভিটো দিয়েছে, সেই দেশের তারুণ্য আজকে স্বাধীনতার পক্ষে হ্যাঁ বলেছে।
“জাতিসংঘে সেসব দেশের সরকার যতবার ‘নো, নো’ বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে তার চেয়ে অনেক গুণ স্বরে ‘ইয়েস, ইয়েস’ বলেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে যারা কথা বলেছে, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, পুলিশি হামলার শিকার হয়ে যারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে তাদের কণ্ঠ উচ্চারণ করেছে, তাদের প্রতি বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আমরা সংহতি জানাই, অভিনন্দন জানাই।”
ফিলিস্তিনে যে আগ্রাসন চলছে, তাতে সহায়তা করায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে সাদ্দাম বলেন, “আমরা দেখেছি যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, যারা বাক্-স্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয়, যারা বলে গণতন্ত্রের টেন্ডার নিয়েছে সারা জীবনের জন্য, যারা রাইট টু প্রটেস্টের কথা বলে, যারা পিসফুল অ্যাসেম্বলির কথা বলে, আমরা দেখেছি তাদের মুখোশ কীভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে।
“আমরা দেখেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন চলমান রয়েছে, সেখানে আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, আন্দোলন করার কারণে শিক্ষার্থীদের উপর সাসপেনশন নেমে এসেছে। আমরা ধিক্কার জানাই- পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম নির্যাতন পরিচালনা করে।”
ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে মন্তব্য করে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “বাংলাদেশে আমরা মানবতার বিরোধীদের বিচার নিশ্চিত করতে পেরেছি, আমরা মনে করি ফিলিস্তিনে যারা আগ্রাসন পরিচালনা করছে, স্কুলে-হাসপাতালে যারা আক্রমণ করছে, নারী-শিশুদের যারা হত্যা করছে, তারাও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত, তারাও মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব ক্রাইমস অ্যান্ড ট্রাইবুন্যালে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চাই।
“জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি প্রস্তাবের ভিত্তিতে আগ্রাসনবাদী শক্তি ফিলিস্তিনের মানচিত্র যতটুকু দখল করেছে, সেই দখলদার শক্তির হাত থেকে আমরা ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা চাই, স্বাধীনতা চাই।”
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, “আজকের এই সংহতি সমাবেশ থেকে আমরা সারা বিশ্বে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর সংহতি জানিয়ে বলতে চাই, বিশ্বের যেখানে নিপীড়িত, নির্যাতিত ও শোষিত মানুষের পক্ষে তারুণ্যের কণ্ঠ প্রতিধ্বতি হবে, সেখানে খুঁজে পাবেন ছাত্রলীগের আওয়াজও। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মুক্তি ও স্বাধীনতার জয়গান গাইবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।”
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর সৈকত, সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু, বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থী ইসহাক আহম্মেদ, আব্দুল্লাহ বাদাউই বক্তব্য দেন।