এখনকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা যে পরিচিতি পান তা ফেইসবুকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের কারণে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
Published : 25 Aug 2019, 03:22 AM
শনিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা ও তার বাস্তবায়ন’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, “বঙ্গবন্ধু তার সময়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কেমন হবে সেই সমন্ধেও বলেছেন। তিনি বলেছেন শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিটাকে দূরে রাখতে হবে। রাজনীতি তো থাকবেই কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি কিন্তু ওই পরিস্থিতি তৈরি করে যাননি। আজকে কী অবস্থা, যেই দল আসে ক্ষমতায়, বিশ্ববিদ্যালয় সেই দলের হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু কুড়ি বছর আগে এই অবস্থায় ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয় ডিসেন্টের জায়গায় থাকতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তি-তর্কের জায়গায় থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এক ছাঁচের হতে পারে না। যদি হয়, সেদেশের শিক্ষা, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা খুব সম্ভব।
“…আজকে আমাদের ৫৪টা যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে বঙ্গবন্ধুর সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের সাথে এখনকার এই উপাচার্যদের সাথে তুলনা করেন তো আপনারা একজনের নামও জানেন কি না। যদি কারও নামও জানেন সেটা ব্যাঙ্গার্থে জানেন, ফেইসবুকের ব্যঙ্গ, বিদ্রুপের কারণে জানেন। অন্য কোনো কারণে জানেন বলে আমার মনে হয় না।”
সরকারের সমালোচনা করে এই অধ্যাপক বলেন, “বর্তমান সরকার তো বঙ্গবন্ধুরই সরকার। কিন্তু তাদের সব বাদ দেন শুধু তাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির ভাবনা এবং বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও সংস্কৃতির ভাবনা খালি একটু মিলিয়ে দেখেন। আমি বলব তারা বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন, তারা যদি কিছু নতুনত্ব আনতে চান ব্যবস্থায় তাহলে বঙ্গবন্ধু যা বলেছেন সেইটাতে যদি ফিরে যান, সেটিই হবে নতুনত্ব। কারণ তারা যা করছেন সব বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-আদর্শের বিপরীত।”
তিনি বলেন, “প্রতিরক্ষা খাত থেকে শিক্ষা খাত যদি না বাড়ে তাহলে তো হবে না। আপনারা জানেন কি না জানি না, প্রতিরক্ষা খাতে যতগুলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, থাকতেই পারে অনেক, সবগুলির ব্যয় আমি যত দূর জানি শিক্ষা বাজেট থেকে, প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে যায় না।
“আমাদের তো ক্যাডেট কলেজের প্রয়োজন নেই। এটা আইয়ুব খান করেছিলেন। সবাই আপনারা এখন উপনিবেশের কথা বলেন যে, উপনিবেশিক মনকে আপনারা পরিবর্তন করবেন। তাহলে আইয়ুব খানের ব্যবস্থাগুলো এখনও চালু কেন? ক্যাডেট কলেজগুলিকে কেন প্রযুক্তি কলেজ করা হচ্ছে না? ক্যাডেট কলেজগুলোর আমাদের কী দরকার? কিন্তু যেহেতু সৈনিকদের ওই খানে প্রাধান্য ছিল, আমাদের ওই খানে সৈনিকদের প্রাধান্য থাকতে হবে সেজন্য ক্যাডেট কলেজগুলোকে রাখা হয়েছে। এই সব প্রশ্ন কেউ তুলবেন না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা যদি আমাদেরকে গ্রহণ করতে হয় তাহলে কিন্তু এই প্রশ্নগুলো আমাদের তুলতে হবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মো মাহবুবর রহমান, বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।