মুসলিম বিশ্বে খুনোখুনিতে লাভবান অস্ত্র বিক্রেতারাই: শেখ হাসিনা

মুসলিম দেশগুলোতে সহিংসতা, রক্তপাতের অবসানে ওআইসিকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2019, 01:42 PM
Updated : 9 June 2019, 02:15 PM

সৌদি আরবসহ তিন দেশ সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে রোববার বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই যে আমরা আত্মঘাতী সংঘাত করে যাচ্ছি, একে অপরকে খুন করছি, রণক্ষেত্র হচ্ছে সমস্ত মুসলিম কান্ট্রি।

“প্রতিটা মুসলিম কান্ট্রির মধ্যেই খুনোখুনি হচ্ছে। লাভবান কে হচ্ছে? যারা অস্ত্র সরবরাহ করছে তারা, যারা অস্ত্র তৈরি করছে, বিক্রি করছে তারাই লাভবান হচ্ছে। আর মুসলমান মুসলমানের রক্ত নিচ্ছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “যেটা বাস্তব যেটা সত্য সেটাই বললাম। কারণ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ছাড়া কারও কাছে আমরা মাথা নত করব না। আমার বাবাও করেনি আমিও করব না। ওটা আমরা শিখিনি।”

এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার তাগাদা সৌদি আরবের মক্কায় ওআইসি সম্মেলনে দিয়ে এসেছেন বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “লিখিত বক্তব্যের বাইরেও ওআইসিতে অনেক কথা বলে এসেছি। আমাদের মধ্যে যদি কোনো দ্বন্দ্ব থাকে তা আমাদের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার। ওআইসির এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া দরকার।”

ঈদের আগে তিন দেশ সফরে  গত ২৮ মে জাপানের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। টোকিওতে ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি।

জাপান সফর শেষে ওআইসির চতুর্দশ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ মে শেখ হাসিনা সৌদি আরবে যান। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর ওমরাহ পালন করেন তিনি, জিয়ারত করেন মহানবীর (স.) রওজা। এরপর যান ফিনল্যান্ডে।

জাপানসহ তিন দেশ সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে রোববার বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

মুসলিম দেশগুলোতে মানববিনাশী জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা।

ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কে ভালো মুসলিম, কে না কে সঠিক, কে সঠিক না কে ভালো কাজ করছে কে করছে না- সেটা বিচার করার দায়িত্ব আল্লাহ আমাদের দেননি। কেন মানুষ আল্লার ক্ষমতা কেড়ে নেবে? শেষ বিচার তো তিনি করবেন।

“মানুষ মারলেই একেবারে বেহেস্তে চলে যাবে এটা তো কোনো দিন হয় না। একজন লোক নিরীহ মানুষ মেরে বেহেস্তে চলে যাবে এমন নিয়ম তো আল্লাহ করেননি।

“এই তো আমরা হাঁটতে হাঁটতে বেহেস্তে পৌঁছলাম এমন অনেক কথা আমরা শুনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত নিউজ দেয়, এত আইটেম দেয়, এমন তো কেউ দেয় না যে, আমি এখন মানুষ খুন করে বেহেস্তে বসে আরামে আঙ্গুর ফল খাচ্ছি; এমন কেউ দিতে পেরেছে?”

শেখ হাসিনা বলেন, “বেহেস্তে যেতে হলে আল্লাহ রাসুলের নাম নাও, মানুষকে সাহায্য কর, তোমার ধন সম্পদ দরিদ্রের মাঝে বণ্টন কর, আল্লাহ তোমাকে এমনিই বেহেস্তে টেনে নেবে। নাহ, সে এগুলো না করে করল কি? মানুষ খুন করে বেহেস্তে যাবে।

“আর বেহেস্তে গিয়ে তারা তো একটা মেসেজও দিতে পারেনি। তারা যদি মেসেজ পাঠাত তখন না হয় বুঝতাম।”