পাসপোর্টবিহীন পাইলট: ইমিগ্রেশন বিভাগকেই দুষলেন প্রধানমন্ত্রী

পাসপোর্ট ছাড়া পাইলটের রওনা হওয়ার ঘটনায় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2019, 02:03 PM
Updated : 9 June 2019, 02:13 PM

বিদেশ সফর থেকে ফেরা শেখ হাসিনা রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “হয়ত পাসপোর্ট ভুলে (ফেলে) যেতে পারে। কিন্তু এখানে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে যারা ছিল, তাদের তো এই নজরটা থাকতে হবে। আমি সাথে সাথে বলে দিয়েছি, যারা ইমিগ্রেশনে ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।”

প্রধানমন্ত্রীকে আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ফজল মাহমুদ পাসপোর্ট ছাড়াই বুধবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়েছিলেন। কাতারের দোহার হাম্মাদ বিমানবন্দরে গিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি।

পরে প্রধানমন্ত্রীকে আনতে আরেকজন পাইলট রওনা হন। তিনি শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আসেন।

ওই ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য ইমিগ্রেশনে কর্মরত পুলিশের এসআই কামরুজ্জামানকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটিও কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে ‘খুব কড়াকড়ি’ করার উপর জোর দিয়ে বলেন, “যত ভিআইপি হোক না কেন, এর পরে আর কাউকে ছাড়া হবে না।”

রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থায় প্রধানমন্ত্রীর চলাচলে এর আগেও অঘটন ঘটেছিল। একবার বিমানের একটি নাট ঢিলা হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে তুর্কমেনিস্তানে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছিল। আরেকবার শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে কিছু পড়ে থাকায় তাকে নিয়ে বিমানের নামতে দেরি হয়েছিল।

ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের পর তুর্কমেনিস্তানের আশখাবাত বিমানবন্দরে বিমানের বোয়িং উড়োজাহাজটি

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে শেখ হাসিনা সফরের সময় সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে সাংবাদিকদেরই পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “যখনই বিমানে উঠি, তখনই একটা ঘটনা ঘটে, একটা নিউজ হয়।এই নিউজটা কেন হয়,আমি জানি না।”

জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমানের উন্নয়নে নেওয়া নানা পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কি না, শেখ হাসিনার কথায় সেই সন্দেহের সুরও ফুটে ওঠে।

“দিনরাত পরিশ্রম করে,নতুন প্লেন কিনে যখনই পরিস্থিতিটা একটু উন্নত করা হয়, তখনই এরকম একটা পরিস্থিতির খবর হয়।”

বিমানে সোনা চোরাচালান এবং আসন নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ায় তা কারও মধ্যে ক্ষোভ জন্ম দিতে পারে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমরা বিমানকে বলতাম স্বর্ণপ্রসবী নীলিমা। খালি আমরা গোল্ড পাই, আমাদের রিজার্ভ বাড়ে। সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে যারা বিমানকে নিয়ে ব্যবসা করত, তাদের আঁতে একটা গা লেগেছে।

“টিকেট নিয়ে ঝামেলা ছিল। একদিকে টিকেট পাওয়া যায় না, আরেক দিকে সিট খালি থেকে যায়। আমি ধরলাম। এখন আর সিট খালি থাকে না। যারা এই সিটের ব্যবসা করত, তাদেরও তো একটা ক্ষোভ আছে।”

যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেটা অনেকের পছন্দ হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।