দুই চিকিৎসা কর্মকর্তা এদিন আদালতের তলবে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
কিন্তু তা নাকচ করে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “এভাবে যদি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেন, তাহলে জাতির কাছে কী বার্তা যাবে? এভাবে রিপোর্ট দেওয়ার কারণে একটা মামলার বিচার প্রভাবিত হয়, এমনকি রায় ভিন্ন হয়। বাদী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।”
বিচারক বলেন, “যেখানে মেয়েটির মা ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন, সেখানে চিকিৎসক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কীভাবে এরকম অসঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করেন!”
এ আদালতের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলামের নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
রাঙ্গাবালীর সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে গত বছরের ২৪ অক্টোবর তার বাড়িতে দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
তার পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে প্রথমে পুলিশ তা নেয়নি। তিন মাস পর গত ৩ জানুয়ারি পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশী অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সেখানে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মেয়েটির মা। পরে আদালতের নির্দেশে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ গত ২০ জানুয়ারি মামলা গ্রহণ করে।
ওই রাতেই পুলিশ এ মামলার অন্যতম আসামি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নবিনূর রহমানকে (৪০) গ্রেপ্তার করে।
এ মামলার আরেক আসামি দানেশ চৌকিদার হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনের সঙ্গেই আসামিপক্ষ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রেজাউর রহমান প্রতিবেদনের মতামত অংশে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে লেখেন, ‘নিহতের গলায় দাগ রয়েছে, শ্বাসরোধে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তবে এটা দুর্ঘটনাজনিত কারণেও হতে পারে।’
প্রতিবেদনের ওই মতামতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন সিভিল সার্জন শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম।
সরকারি বরাদ্দের প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন শাহ মো. মুজাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদকের করা দুটি মামলা রয়েছে।
দুদক পটুয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মানিক লাল দাস গত বছর নভেম্বরে কলাপাড়া থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন।