পতাকার মর্যাদা রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকুন: সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকও রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2019, 10:20 AM
Updated : 3 March 2019, 12:35 PM

সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের কাজের মধ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

রাজশাহী সেনানিবাসে রোববার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চারটি ব্যাটালিয়নকে বীর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, পতাকা হল জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের কর্তব্য।

“জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছি। এই সম্মান ও গৌরব অর্জন করায়… আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি “

উপস্থিত সেনা সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্য নিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন, তার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সব সময় প্রস্তত থাকবেন।’’

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছানোর পর শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বীর রেজিমেন্টের চারটি ব্যাটালিয়নকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দেন এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন মিশনে ও জাতিসংঘে নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্য নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করছে।”

সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন ও সেনা সদস্যদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বিস্তারিতভাবে অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “একটি আধুনিক ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। এজন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় সেনাবাহিনীতে নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।”

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থবারের মত এবং এক টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের সুযোগ পাওয়ায় আমি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শাসক হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে আমরা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছি।”

আর এ কাজে সব সময় সশস্ত্র বাহিনীকে পাশে পাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের সেবা করার জন্য আপনাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা পেয়েছি। বর্তমান সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার সময় যখনই প্রয়োজন হবে তখনই সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে- এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”

সেনাবাহিনীকে দেশের মানুষের ‘ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী পেশাদারিত্বের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ ও মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।”

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ওমর ফারুক চৌধুরী, প্রকৌশলী এনামুল হক, আয়েন উদ্দিন, ডা. মনসুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।