ঢাকার আদাবরে প্রায় চার বছর আগের কলেজ শিক্ষক কৃষ্ণা কাবেরী হত্যা মামলার রায় জানা যাবে নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি।
Published : 23 Dec 2018, 03:06 PM
দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন রোববার রায়ের এই দিন ঠিক করে দেন।
একমাত্র আসামি গুলশানের ব্রোকারেজ হাউজ হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে গত বছরের ২০ এপ্রিল এ হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।
এ ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঞা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার বিচারে বাদীপক্ষে মোট ২২ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত।
“যেহেতু মামলায় অভিযোগ গঠনের পর হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসামি পালিয়ে গেছেন, সেহেতু তার আত্মপক্ষ সমথর্নের শুনানি হয়নি।”
২০১৫ সালের ৩০ মার্চ মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের ভাড়া বাসায় হামলায় মারাত্মক আহত ও দগ্ধ হয়ে পরদিন হাসপাতালে মারা যান আদাবরের মিশন ইন্টারন্যাশনাল কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক কৃষ্ণা কাবেরী মণ্ডল (৩৫)।
তার স্বামী সীতাংশু শেখর বিশ্বাস বিআরটিএর প্রকৌশল বিভাগের উপ-পরিচালক ছিলেন।
ঘটনার পর তার বড় ভাই সুধাংশু শেখর বিশ্বাস গুলশানের ব্রোকারেজ হাউজ হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম পলাশকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এক বছরের বেশি সময় তদন্ত চালিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সীতাংশু বিশ্বাস হাজী আহমেদ ব্রাদার্স সিকিউরিটিজের মাধ্যমে বিও অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে আট লাখ টাকা ছিল।
শেয়ার ব্যবসার সূত্রেই জহিরুলের সঙ্গে সীতাংশুর পরিচয়। সীতাংশুর শেয়ার আত্মসাৎ করার জন্য তাকে হত্যার চেষ্টা করেন জহিরুল এবং তার হামলায় কৃষ্ণার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করা হয় অভিযোগপত্রে।
সে সময় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর সীতাংশু কুমার বিশ্বাসের ইকবাল রোডের বাসায় তার জন্য জন্মদিনের কেক, মিষ্টি ও মোমবাতি নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যান জহিরুল । কেক কাটার পর কৌশলে সিতাংশুকে চেতনানাশক মেশানো ফলের জুস খাইয়ে অচেতন করে তিনি হাতুড়িপেটার চেষ্টা করেন। তখন কৃষ্ণা বাধা দিতে গেলে তিনি স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই এলোপাতাড়ি পেটান।
পরে মোমবাতি থেকে কৃষ্ণার শাড়ি ও ঘরে আগুন ছড়িয়ে যায়। দগ্ধ কৃষ্ণাকে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় কৃষ্ণার দুই মেয়েও হাতুড়ির আঘাতে আহত হয়।
গ্রেপ্তারের পরে আসামি জহিরুল বিচারকের কাছে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
মামলার বাদী কৃষ্ণা কবেরীর ভাসুর সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, কৃষ্ণার স্বামী শিতাংশু শেখর বিশ্বাস, এই দম্পতির দুই মেয়ে শ্রাবণা বিশ্বাস শ্রুতি, অদ্বিতীয়া আরভি বিশ্বাস অদৃতি, প্রতিবেশী বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. আবু শামা, মহাখালী মেট্রোপলিটন মেডিকেলের চিকিৎসক মনির হোসেন, আসামির জবানবন্দী গ্রহণকারী হাকিম ঢাকার বতর্মান অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আমিনুল হক, হাকিম এমদাদুল হক, ফায়ার সাভির্সের কমর্কর্তা এম এ আলিম সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।