গীতিকার, সুরকার ও গায়ক শফিক তুহিনের দায়ের করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।
Published : 06 Jun 2018, 01:01 PM
মঙ্গলবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার আসিফকে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক প্রলয় রায় রিমান্ডের এই আবেদন করেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তাহেরা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অতিরক্তি মুখ্য মহনগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরীর আদালতে দুপুরে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকার এফডিসি এলাকায় আসিফ আকবরের স্টুডিও থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় তেজগাঁও থানায় দায়ের করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ওই মামলায় আসিফ আকবর ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা রয়েছে।
এ মামলায় অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন শিল্পীর ৬১৭টি গান ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর করে মোবাইল ফোনের কনটেন্ট হিসেবে বিক্রি করার অভিযোগ আনা হয়েছে আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে শফিক তুহিনের রচিত শতাধিক গান রয়েছে বলে এই গীতিকারের দাবি।
মামলার এজাহারে শফিক তুহিন বলেছেন, গত ১ জুন রাতে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ‘গান চুরির’ বিষয়টি জানতে পারেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্ট এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো বিক্রি করে ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
ঘটনা জানার পর গত ২ জুন রাতে শফিক তুহিন বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিলে আসিফ আকবর সেখানে বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন। পরে ফেইসবুক লাইভেও ‘অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা’ বক্তব্য এবং ‘শায়েস্তা করার হুমকি’ দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
এ বিষয়ে আসিফ আকবরের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি। তবে ২ জুন রাতে ফেইসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন, জালিয়াতি করে অন্যের গান বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ শফিক তুহিনসহ কয়েকজন শিল্পী করেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা।
আসিফ ফেইসবুকে বলেন, তিনি আট বছর গান থেকে দূরে ছিলেন এবং আবার ফিরে এসে ‘চুটিয়ে’ কাজ করছেন- এটাই সবার মাথাব্যথার কারণ।
৪৬ বছর বয়সী আসিফের প্রথম অ্যালবাম 'ও প্রিয়া তুমি কোথায়' প্রকাশিত হয় ২০০১ সালে। ওই অ্যালবামের কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।
পরের বছরগুলোতে ঢাকাই সিনেমার বহু গানে কণ্ঠ দেন আসিফ। ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর তার অ্যালবাম ছিল বিক্রির শীর্ষে। এক পর্যায়ে তিনি সংগীত প্রযোজনায় নাম লেখান।
আর ৪৩ বছর বয়সী শফিক তুহিন তার প্রথম গান ‘এর বেশি ভালোবাসা যায় না, ও আমার প্রাণ পাখি ময়না’ দিয়েই আলোচনায় আসেন। ২০১১ সালে জিতে নেন সেরা গীতিকারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। লেখার পাশাপাশি তিনি সুরও করেন এবং নিজে গানও করেন।