খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়া তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও তদারকির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে নির্বাচন কমিশনের তদন্ত কমিটি।
Published : 01 Jun 2018, 12:18 AM
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব খোন্দকার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের এই কমিটি বৃহস্পতিবার ইসি সচিবের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেছে।
গত ১৫ মে খুলনা সিটিতে ভোটের দিন বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।
এরপর তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করে অনিয়মের কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেয় নির্বাচন কমিশন। কমিটির সদস্যরা খুলনা গিয়ে ভোটকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে তাদের এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের জন্য দায়ীদের শনাক্ত করা হয়েছে; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি আমরা। সেই সঙ্গে আগামীতে যাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে কিছু সুপারিশ করেছি।”
তবে তদন্ত কমিটি কাদের চিহ্নিত করেছে এবং কী কী সুপারিশ করা হয়েছে- সেসব বিষয়ে কমিশনের মূল্যায়নের আগে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি ইসির এই যুগ্ম সচিব।
তিনি বলেন, “আমরা সবার লিখিত বক্তব্য নিয়েছি। তাদের বক্তব্যের মধ্যে সব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এখন কমিশন সভায় এ প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন উপ-সচিব মো. ফরহাদ হোসেন ও সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহ আলম। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন; ম্যাজিস্ট্রেট-প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যসহ ঘটনায় তাদের ভূমিকা; এজেন্টদের শুনানি; দোষী ব্যক্তি-কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা এবং ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশ করার দায়িত্ব ছিল এই কমিটির সদস্যদের ওপর।
‘অস্বাভাবিক ভোটের’ প্রতিবেদন রোববার
এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক প্রায় ৬৬ হাজার ভোটে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।
প্রায় ৫ লাখ ভোটারের এই সিটি করপোরেশনে ভোটের হার ছিল ৬২ দশমিক ১৯।
রিটার্নিং অফিসারের ঘোষিত ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, মেয়র পদে ২৮৬টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে ৯১.৩৮%, ৯৭.৬০% ও ৯৯.৯৪% ভোট পড়েছে। এর মধ্যে একটি কেন্দ্রে মাত্র একটি ব্যালট পেপারে ভোটদান বাকি ছিল।
আর ৮০% শতাংশের ওপরে পড়েছে ৯টি কেন্দ্রে ও ৭০ শতাংশের ওপরে পড়েছে ৪৫টি ভোট কেন্দ্রে।
ইসির যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “তিনটি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। কাগজে-কলমে তা অবৈধ বা বাতিল হয়নি। কিন্তু কী ঘটেছিল সেখানে তা নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন রোববার ইসির কাছে জমা দেওয়া হবে।”