ভোটে গণমাধ্যমের জন্য নতুন বিধি-নিষেধ নয়: ইসি সচিব

স্থানীয় সরকার ও সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণমাধ্যমের জন্য নতুন কোনো নীতিমালা করা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2018, 05:51 PM
Updated : 8 May 2018, 05:51 PM

তবে ভোটের দিন সংবাদ সংগ্রহ, সরাসরি সম্প্রচার ও ভোটকেন্দ্রে ইসির দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান তিনি।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ইসি সচিবের এই বক্তব্য আসে।

বিভিন্ন নির্বাচনে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহ, প্রচার, প্রতিবেদন প্রকাশ এবং ভোট গ্রহণের দিন ভোটকেন্দ্রে সংবাদ সংগ্রহ, প্রকাশ/প্রচার বিষয়ক একটি নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে আলোচনায় এই সভা ডেকেছিল ইসি।

কমিশনের নির্দেশনায় বলা হয়- প্রিজাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না; সাংবাদিকরা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না; কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করা থেকে বিরত থাকবেন; সাংবাদিকরা ভোটে প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবেন এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্যে সংবিধান, নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় নতুন কিছু প্রস্তাবে সংযোজন করা হয়। তাতে বলা হয়- ভোটদানের ছবি তোলা যাবে না; ভিডিও করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে কর্মরতদের সাক্ষাতকার নেওয়া যাবে না; পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না; ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না; ভোট গণনা সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না এবং একই সঙ্গে একাধিক সাংবাদিক একই কক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না।

গণমাধ্যমকর্মীরা আলোচনায় অংশ নিয়ে ইসির উদ্যোগের সমালোচনা করে জানান, ভোটকে সামনে রেখে আকস্মিকভাবে নীতিমালা প্রণয়নের তৎপরতায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরি হতে পারে। গণমাধ্যকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে বেশ সচেতনভাবেই কাজ করছেন। বিদ্যমান আইন-বিধির যথাযথ প্রয়োগ হলে নীতিমালার প্রয়োজন পড়বে না।

গণমাধ্যমের জন্য নীতিমালা না করে অবাধ, সুষ্ঠু ভোট আয়োজন করার বিষয়ে কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগের পরামর্শ দেন তারা।

পরে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‍“গণমাধ্যমের জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা করা হচ্ছে না। নতুন কোনো বিধি-নিষেধ আরোপের উদ্দেশ্য আমাদের নেই। গণমাধ্যম আমাদের সহায়ক শক্তি। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে ভোটের সংবাদ আরো কীভাবে সুচারুভাবে প্রচার করা যায়।”

গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ কার্যকর করা হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে কর্মরতদের সাক্ষাতকার নেওয়া যাবে না-এমন বিষয় যুক্ত রাখা হবে না।

‍“স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা কাজ করে; নিজেদের নীতিমালা মেনে কাজ করে। আগামীতে এ কাজ আরও সুন্দর হবে আশা করি। কোনো ধরনের ভুল বুঝাবুঝি যেন না ঘটে সে বিষয়ে নজর রাখা হবে। যে কোনো অনিয়মের বিষয়েো কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”

গণমাধ্যমের প্রশংসা করে তিনি জানান, ভোটের দিন অনিয়মের বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন দেখেই ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় সেল থাকে। সেক্ষেত্রে ফল প্রচার ও সুব্যবস্থাপনায় একযোগে কীভাবে কাজ করা যায় তাও দেখা হবে।

মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আশিক রহমান, আশিস সৈকত, জ ই মামুন, মোস্তফা ফিরোজ, জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল, এ কে এম মনজুরুল হক, মঈনুল হক চৌধুরী, কাজী জেবেল, সাইদুর রহমান, রাজা রায়, একরামুল হক সায়েম, আরাফাত সিদ্দিকী, রাসেল আহমেদ, মুকিমুল আহসান হিমেল, তানিয়া আহমেদ, আসমা মিতা, কাওসারা চৌধুরী কুমু, হুমায়ুন কবীর, এমরান হোসাইন, তোফায়েল আহমেদ, জুলহাস কবির, বেলায়েত হোসেন, সিরাজুজ্জামান হেলালা, সাজ্জাদ হোসেন, সিরাজুস সালেকীন, আরিফুল ইসলামসহ অর্ধশত গণমাধ্যমের প্রতিনিধি।

ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, যুগ্মসচিব খোন্দকার মিজানুর রহমান, আবুল কাসেম, এস এম আসাদুজ্জামান, ফরহাদ আহাম্মদ খান, উপ সচিব ফরহাদ হোসেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব এস এম মাহফুজুল হক,  তথ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফজলে রাব্বীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।