ভোটের তারিখ ‘ফাঁস’ নিয়ে তদন্তে ইসি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ‘ফাঁস’ কীভাবে হল, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2018, 06:40 PM
Updated : 15 March 2018, 08:16 AM

তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইসি সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যম ও ইসির কর্মকর্তাদের ডেকেছে।

ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে ‘তথ্য ফাঁস’ বিষয়ে দেড় মাস পর ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

১১ মার্চ এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) ইসি সচিবালয়ের (যুগ্মসচিব) আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘সংবাদ মাধ্যমের নিকট তথ্য ফাঁস বিষয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে’ কর্মকর্তাদের বলা হয়, “উপর্যুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, গত ২১ জানুয়ারি কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ঠিক হওয়ার ব্যাপারে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত বিষয়ে তদন্ত করার জন্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীকে দায়িত্ব প্রদান করায় এ বিষয়ে ১৪ মার্চ বুধবার সকাল ১১টার সময় নিম্ন স্বাক্ষরকারীর অফিস কক্ষে আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।”

বুধবার সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তার সঙ্গে ইসি ‘তথ্য ফাঁস’ নিয়ে আলোচনায় যাননি বলে জানান একজন কর্মকর্তা।

১১ মার্চ এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) ইসি সচিবালয়ের (যুগ্মসচিব) আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘সংবাদ মাধ্যমের নিকট তথ্য ফাঁস বিষয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে’ গণমাধ্যকর্মীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “উপর্যুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, গত ২১ জানুয়ারি কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ঠিক হওয়ার ব্যাপারে কয়েকটি পত্রিকার ন্যায় আপনার পত্রিকায়ও সংবাদ প্রকাশিত হয়।

নির্বাচন ভবন

“সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া সংবাদটির বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় ১৫ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নিম্ন স্বাক্ষরকারীর অফিস কক্ষে আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য  আপনাকে/আপনার পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সম্মানিত সাংবাদিক মহোদয়কে আসার জন্যে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।”

গত ২৫ জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে ১৮ তারিখ ভোটের দিন রেখে বাংলাদেশের একবিংশতম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা, ৭ ফেব্রুয়ারি যাচাই বাছাইয়ের পর ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সূচি রাখা হয়।

কিন্তু তার আগে ২২ জানুয়ারি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে জানান, দেশের একুশতম রাষ্ট্রপতি পেতে নির্বাচন কমিশন আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “১৯ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে বলে আমি ইসির কাছ থেকে জানতে পেরেছি।”

ওই দিন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “২৫ জানুয়ারি কমিশন বৈঠক হবে। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।”

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ভোটের তারিখ নিয়েও আমার কিছু জানা নেই। আমার সামনে (২২ জানুয়ারি) কমিশনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের (১৯ তারিখ) এরকম কিছু আলোচনাও হয়নি।”

আইনমন্ত্রী কীভাবে রাষ্ট্রপতির ভোটের তারিখ জানালেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এক নির্বাচন কমিশনার।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার এখতিয়ার সাংবিধানিক এ সংস্থাটির। তবে সংসদ কাজে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আইনমন্ত্রী।

অথচ নির্বাচন কমিশনের ‘তথ্য ফাঁস’ নিয়ে তদন্তে নামলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যে তারিখের কথা আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, সে তারিখ কমিশনের তফসিলের তারিখের সঙ্গেও মেলেনি।

‘সংবাদ মাধ্যমের নিকট তথ্য ফাঁস বিষয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে’ ইসি সচিবালয় ও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলেও দায়িত্বশীল মন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কমিশন আলোচনা করছে কি না, তা নিশ্চিত করেন নি কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, “এ নিয়ে (ভোটের তারিখ ফাঁস) কোনো তদন্ত কমিটি হয়নি; এ ধরনের তদন্তের কথা আমার জানা নেই।”