উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে পার্বত্য জেলাগুলোর পাশাপাশি সারা দেশে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 06 May 2018, 01:24 PM
তিনি বলেছেন, “শান্তিপূর্ণ পরিবেশটা যাতে বজায় থাকে সেটা আমি চাই। সকলের সাথে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা থাকবে। এখানে কে পাহাড়ি, কে বাঙালি সেটা বড় কথা না। মানুষ মানুষই। মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখতে হবে।”
রোববার গণভবনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বান্দরবান জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে মত বিনিময়ে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
দুই দশক আগে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে দেশের পার্বত্য তিন জেলায় অস্থিরতার অবসানের প্রত্যাশা জাগালেও পাহাড়ি সংগঠনগুলোর নিজেদের কোন্দলে গত পাঁচ মাসেই ১৮ জনের প্রাণ গেছে।
সর্বশেষ গত ৩ মে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেএসএসের (এমএন লারমা) অন্যতম শীর্ষ নেতা শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং পরদিন তার শেষকৃত্যে অংশ নিতে যাওয়ার পথে সশস্ত্র হামলায় নিহত হন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের অন্যতম শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাসহ পাঁচজন।
ভিডিও কনফারেন্সে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, “বান্দরবান এক সময় অশান্ত বান্দরবান ছিল। এখন শান্তির বান্দরবানে রূপান্তরিত হয়েছে। উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে এগিয়ে চলেছে।”
সর্বশেষ ২০১২ সালে এই পার্বত্যজেলায় প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আবারও আপনাকে দেখার জন্য মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে।”
প্রধানমন্ত্রী বান্দরবান সফরের চেষ্টা করবেন জানিয়ে সবার মৌলিক অধিকার পূরণে শান্তি আর নিরাপত্তার ওপর জোর দেন।
“সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী আমি বলব, শান্তি, নিরাপত্তা এবং একটা স্বস্তিমূলক পরিবেশ আমাদের একান্তভাবে দরকার। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এই দেশকে গড়ে তুলতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়; ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে। সেই সোনার বাংলাদেশই আমরা গড়তে চাই। ”
পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার হার বাড়াতে আবাসিক স্কুল তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, “যদিও আমরা যোগাযোগ ববস্থার অনেক উন্নতি করেছি, ছেলেমেয়েরা যাচ্ছে। তবে আমি মনে করি, আবাসিক স্কুল থাকলে পরে তাদেরকে এত দূর দূরান্ত থেকে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। সেখানে থেকে তারা পড়াশোনা করতে পারবে।”
ইতোমধ্যে কয়েকটি আবাসিক স্কুল চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাচ্ছি আরও বেশি আবাসিক স্কুল হোক।”
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা গণভবনে এ অনুষ্ঠানে উপসিন্থত ছিলেন।