ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর আজিমপুর কবরস্থানে প্রাণের চিহ্ন নিয়ে জেগে ওঠা শিশুটির বয়স একদিনও পূর্ণ হল না।
Published : 24 Apr 2018, 10:23 AM
সোমবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকার শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক এম এ আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. আবু তৈয়ব আগের দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, শিশুটির অবস্থা ভালো নয়। তার জন্য কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তারা সাধ্যমত চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাদের কোনো চেষ্টাই কাজে আসেনি।
শিশুটির বাবা মিনহাজ উদ্দিন সাভারের নয়াডিঙ্গির একটি পোশাক কারখানায় আয়রনম্যান পদে কাজ করেন। আর মা শারমিন আক্তার এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া জানান, শনিবার সাভার থেকে এসে গাইনি বিভাগের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন শারমিন আক্তার। সোমবার সকালে তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর শিশুটিকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে গোসলের সময় শিশুটির দেহে প্রাণ থাকার বিষয়টি টের পান ঢাকা সিটি করপোরেশনের ড্রেসার জেসমিন বেগম।
শিশুটি নড়াচড়া করছে জানালে অভিভাবকরা তাকে নিয়ে যান শিশু হাসপাতালে। সেখানে তাকে আইসিইউতে নিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা।
শিশু হাসপাতালের উপ পরিচালক আবু তৈয়ব সোমবার জানিয়েছিলেন, শিশুটির মায়ের রক্তশূন্যতা ছিল। সাত মাসে তিনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শিশুটির হৃদযন্ত্র ঠিকমত কাজ না করায় ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা হয়ত তাকে মৃত বলে ধরে নেন। কিন্তু কবরস্থানে নেওয়ার পর হৃদপিণ্ড সামান্য কাজ করলে তার দেহে প্রাণের অস্তিত্ব বোঝা সম্ভব হয়।
এদিকে জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণার অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে একটি কমিটি করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চার সদস্যের ওই তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ কান্তি পাল।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “শিশুটিকে মৃত বলার পর জীবিত হওয়ার ঘটনা সত্যিই ঘটে থাকলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। সেজন্য ডিএনএ টেস্টসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে।”