শ্রমিক পাচার, গৃহকর্মীকে নির্যাতন এবং মজুরি চাওয়ায় হত্যার হুমকির অভিযোগে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Published : 13 Jun 2017, 10:36 AM
সোমবার সকালে নিউ ইয়র্কের পুলিশ তাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করার কয়েক ঘণ্টা পর কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে হাজির করা হয়।
বিচারক ড্যানিয়েল লুইস ৫০ হাজার ডলারের বন্ড বা নগদ ২৫ হাজার ডলারে তার জামিন ঠিক করে দেন এবং তার পাসপোর্ট জব্দ করার নির্দেশ দেন বলে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন জানান।
অ্যাটর্নি ব্রাউন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শাহেদুলের বিরুদ্ধে এক বিদেশিকে এনে তার কুইন্সের বাসায় রেখে ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মে পর্যন্ত বিনা মজুরিতে জোরপূর্বক কাজ করানোর ঘটনায় শ্রম পাচার ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
কূটনৈতিক কর্মকর্তা হলেও সম্পূর্ণ ‘কূটনৈতিক দায়মুক্তি’র অধিকারী না হওয়ায় তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি।
“মজুরি দাবি করলেই আমিনকে মারধর করা হতো। নির্যাতনে অতীষ্ট হয়ে কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে আমিনকে হত্যার হুমকি- এমনকি বাংলাদেশে তার বৃদ্ধা মা ও ছেলে-মেয়েকেও হত্যার হুমকি দেন।নির্যাতনে অতীষ্ঠ হয়ে গত বছরের মে মাসে আমিন পালিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিচার চায়।”
যুক্তরাষ্ট্রের আইনি কর্মকর্তা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কূটনৈতিক মর্যাদায় বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে ডেপুটি কনসাল জেনারেল যে আচরণ করেছেন, তা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড ও প্রায় চার বছরের ওভারটাইমসহ বেতন ও যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
জামিন পেলে মামলার শুনানির জন্য আগামী ২৮ জুন শাহেদুলকে আবার আদালতে হাজির হতে বলে জানান অ্যাটর্নি ব্রাউন।
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান জানান, তারা ৫০ হাজার ডলারের বন্ড সংগ্রহ করতে সক্ষম হলেও শাহেদুল ইসলামের মুক্তির আনুষ্ঠানিকতায় আরও ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
“তাই বেতন একেবারেই পাননি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি সত্য না মিথ্যা তা আমি বলতে পারবো না। তা নিতান্তই শাহেদুলের ব্যাপার।”
‘প্রচলিত রীতি অনুযায়ী শাহেদুলের পাশে’ থাকবেন বলে জানান কনসাল জেনারেল।
একই ধরনের অভিযোগে এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে নিউ ইয়র্কের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার নোটিস দেওয়ার পর্যায়েই তিনি নিউ ইয়র্ক ছাড়েন।
মামলাটি এখনও ঝুলে থাকলেও তার গৃহকর্মী মাসুদ পারভেজ গ্রিন কার্ড পেয়েছে।