বড় দলের অংশগ্রহণ ছাড়া ‘বর্জনের নির্বাচন’ আর না করার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি ও যুক্তরাষ্ট্র।
Published : 31 May 2017, 05:49 PM
বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন, যাতে বাংলাদেশে নির্বাচনে সংস্কৃতি ও আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
পরে নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট চার সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। এসময় ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতে সবাইকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা দিতে চায় সিইসিকে জানান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকের পর বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, এজন্য যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চায়। এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচন যেন ‘প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে’ প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্ধৃতি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।”
তিনি বলেন, “সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এটা শুধু ভোটের দিন নয়। সবাই যেন ভোটে প্রার্থী দিতে পারে এবং তারা সুচারুভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে।
“বাংলাদেশের অনেক ভালো নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে; আমরাও চাই- ভোটের দিন প্রতিটি নাগরিক যেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে। তাদের প্রতিটি ভোট গণনা হবে- এটাও যেন নিশ্চিত হয়।”
পরে বৈঠকের বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আগামীতে যাতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জানুয়ারির মতো বয়কটের নির্বাচন যাতে না হয়- সে বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে।
সচিব জানান, সৌজন্য সাক্ষাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিগত নির্বাচনে অভিজ্ঞতা, নতুন চ্যালেঞ্জ, তাদের প্রত্যাশা ও সহযোগিতার কথা তুলে ধরেছেন।
“ভোটের ত্রুটি-বিচ্যুতি, হরতাল-জ্বালাও পোড়াও নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে তাদের”।
সিইসিকে উদ্ধৃত করে ইসি সচিব বলেন, “অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে ভোটে সহিংসতা থাকবে না। সবাইকে নিয়ে ভোট করতে উদ্যোগ রয়েছে কমিশনের।”
এসময় সিইসি চার মাসের ব্যবধানের ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন ও ১২ জুনের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
“১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালে আমাদের ভালো নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। চার মাসের ব্যবধানেও ভালো নির্বাচন করেছে ইসি। সেক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যেন আর নয়- সে জন্যে আমরা একমত।”
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটে বড় দল অংশ না নেওয়ায় সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান সচিব।
সচিব বলেন, “সবাইকে মাঠে নামানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরাও উদ্যোগ নিচ্ছি। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে এর কাজ শুরু হবে। সবাইকে ভোটে আনতে হবে এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব ধরনের সহায়তা করে আসছে। তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, ইভিএম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হচ্ছে- কমিশন সবার মতামত নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে আশা করে তারা। পাশাপাশি রোডম্যাপ ধরে কাজ এগোনোর কথাও তুলে ধরা হয় বৈঠকে।