ভাস্কর্য অপসারণ: প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মামলায় ‘হত্যাচেষ্টার’ ধারা

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে, যাতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগও এনেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 08:11 AM
Updated : 27 May 2017, 10:42 AM

শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে এসআই মোহাম্মদ মোফাক্কারুল ইসলাম শুক্রবার রাতে মামলাটি করেছেন।

ঘটনাস্থল থেকে আটক ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি মোর্শেদ হালিম, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী জয় এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফ নূরকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, “মামলায় ৩০৭ ধারাও যোগ করা হয়েছে।”

গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আইনজীবী জীবনানন্দ জয়ন্ত জানান, আটক চারজনকে মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে তোলা হতে পারে। সেখানে তাদের জামিনের আবেদন করা হবে।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের কোনো আবেদন করা হয়নি বলে আদালত পুলিশের এস আই মোজাম্মেল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

শুক্রবার মধ্যরাতে ভাস্কর্য অপসারণে কাজে শ্রমিকরা

ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার পর প্রতিবাদী মিছিল রুখতে পুলিশের ব্যারিকেড

হেফাজতে ইসলামের দাবির মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরানো হয়।

এর প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি মিছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে এগোতে চাইলে শিশু একাডেমির সামনে পুলিশ আটকে দেয়।

মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশ প্রথমে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে; পরে জলকামান থেকে পানি এবং রবার বুলেটও ছোড়া হয়। সেখান থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ।

রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে এই ভাস্কর্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে।

ভাস্কর্য অপসারণের কাজ চলার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ হয়

শুক্রবার ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস

এরপর হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন ভাস্কর্যটির বিরোধিতায় নামে। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন এক দল ওলামার সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে এর নান্দনিক ‘ত্রুটির’ পাশাপাশি জাতীয় ঈদগাহের কাছে অবস্থানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাকারীরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মৌলবাদীদের সঙ্গে আপস করছে সরকার এবং এতে ধর্মীয় মৌলবাদ আরও উৎসাহিত হবে।

পুরনো খবর