জাতীয় সংসদের সংসদ কমিটি একজন মন্ত্রীসহ ৩০ জন সাংসদকে ‘সংসদ সদস্য ভবনের’ ফ্ল্যাট ছাড়তে চিঠি দিলেও তাদের মধ্যে মাত্র চারজনের সাড়া মিলেছে।
Published : 03 May 2017, 04:38 PM
সংসদ কমিটি বলছে, চিঠির সন্তোষজনক জবাব পাওয়া না গেলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে ওই সংসদ সদস্যদের ডাকা হবে।
বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাটে অনেক সংসদ সদস্য নিজে না থেকে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও গাড়ি চালকদের রাখেন- এমন খবর বেশ কয়েকবার সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
যে সংসদ সদস্যরা তাদের ন্যাম ফ্ল্যাটে থাকেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিলের হুঁশিয়ারি আসে গত ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক অনুষ্ঠান থেকে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে সংসদ কমিটি।
শেখ হাসিনা এর আগেও দলীয় বৈঠক এবং সংসদীয় দলের বৈঠকে একাধিকার এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদিও তাতে ফল হয়নি।
সংসদ সদস্যদের আবাসন, ন্যাম ফ্লাটের নিরাপত্তা, অফিস বরাদ্দসহ বিভিন্ন বিষয় তদারকির দায়িত্বে থাকা সংসদ কমিটির বৈঠকে বুধবার এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও নাখালপাড়ায় ন্যাম ফ্ল্যাটে বরাদ্দ নিয়েও থাকেন না- এমন আইনপ্রণেতাদের বাসা ছেড়ে দিতে গত বছরের ২৬ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়। এরপর গত ২৩ এপ্রিল আবারও চিঠি দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি প্রধান হুইপ আসম ফিরোজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৩০ জনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারজন ফ্ল্যাট ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি বাকিরাও জবাব দেবেন।”
ফিরোজ জানান, যারা জবাব দিয়েছেন, তাদের কেউ দাবি করেছেন, তারা সেখানে থাকেন। কেউ লিখেছেন, তাদের পরিবার থাকে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, মাঝে মাঝে এসে থাকেন।
“কেউ বলেছেন ছেড়ে দেব। অনেকে স্টাফদের স্বার্থে সত্য গোপন করেছেন।”
প্রধান হুইপ বলেন, “সবার জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনে স্পিকার মহোদয়ের নেতৃত্বে তাদের ডাকা হবে। কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শনেও যাবে।”
যে মন্ত্রী নিজে ওই ফ্ল্যাটে থাকেন না- তার নাম জানতে চাইলে প্রধান হুইপ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের নাম বলেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর প্রত্যেকেরই নিজের থেকে ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়া উচিত। আমরা আশা করি, সবাই তা করবেন।”
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সংসদ সদস্য ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপরিচিত ও বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য জনবল বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে সংসদ কমিটির বৈঠকে।
এছাড়া নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে সংসদ সদস্য ভবন এলাকায় রাতে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা, পারিবারিক অতিথি ছাড়া অন্য দর্শনার্থীর যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ এবং ভবনগুলোর ছাদ ও অন্যান্য জায়গায় ‘অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের’ তল্লাশি এবং অপসারণ কার্যক্রম অব্যহত রাখার সুপারিশ করেছে কমিটি।
আসম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুস শহীদ, নূর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি, পঞ্চানন বিশ্বাস, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মো. আসলামুল হক এবং তালুকদার মো. ইউনুস বৈঠকে অংশ নেন।