ডাকবাহী ‘মেইল গাড়ি’র স্টিয়ারিংয়ের পেছনে প্রথমবারের মত বসলেন একজন নারী চালক; বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রবেশ করল নতুন অধ্যায়ে।
Published : 09 Apr 2017, 05:03 PM
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম রোববার ঢাকার ডাক ভবন চত্বরে ১০টি গাড়ির চাবি তুলে দেন দশজন নারী চালকের হাতে।
এখন থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন রাস্তায় ডাকবাহী গাড়ি চালাতে দেখা যাবে এই নারী চালকদের।
তারানা হালিম অনুষ্ঠানে জানান, ডাক বিভাগের ‘ডাক পরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের অধীনে নতুন যোগ হতে যাওয়া ১১৮টি যানবাহনের মধ্যে ২০ শতাংশের চালক থাকবেন নারী।
“এটি খুব সুন্দর দৃষ্টান্ত হবে। আমাদের মেয়েরা হেভি ভেহিকেল চালনার জন্য প্রশিক্ষিত ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তারা যখন গ্রামাঞ্চলে বা ঢাকা শহরে এই গাড়িগুলো চালাবেন, তখন সেটি হবে দর্শনীয় ও প্রশংসা করার মত একটি কাজ।”
নারী চালকদের নিয়োগপত্র এবং বেতন-ভাতা সঠিকভাবে দেওয়ার বিষয়ে ডাক বিভাগের কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেন প্রতিমন্ত্রী।
“ডাক বিভাগের নিজস্ব পরিবহন না থাকায় ভাড়া বা চুক্তির মাধ্যমে সড়কপথে ডাক পরিবহন করতে হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাণিজ্যিক পার্সেল ও লজিস্টিকস পরিবহন চালু হবে।”
ডাকগাড়ির বহরে নতুন ১৯টি যানবাহন যুক্ত হওয়াকে ‘সাফল্যের একটুখানি ঝলক’ হিসেবে বর্ণনা করেন এক সময়ের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী তারানা।
তিনি বলেন, “একনেকের অনুমোদন পাওয়ার পর ১১৮টি যানবাহন যাতে দ্রুত চলে আসে, সেজন্য তাগাদা দিচ্ছিলাম। আমি বলব- এই যানবাহনগুলো ডাক বিভাগের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের উপহার।”
তারানা বলেন, এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডাক বিভাগকে ‘নিজের পায়ে দাঁড় করানোর বিষয়টি’ তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন।
“কথা দিয়েছিলাম, নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। ডাক বিভাগের সকলে শতভাগ সহায়তা দিয়েছেন। ডাক বিভাগে হোঁচট খাইনি।”
সারাদেশে নয় হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর রয়েছে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের; কর্মী রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। এক সময় লাভজনক হলেও রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি গত দুই অর্থবছরে গড়ে ২০০ কোটির বেশি টাকা লোকসান দিয়েছে।
তারানা জানান, দেশের সব ডাকঘরে সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করাই বাস্তবায়নাধীন নতুন প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
“পোস্ট অফিস বিশেষ ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করলে পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এজন্য সমস্ত কাজ শেষ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইল পাঠাব। তিনি বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন, আমরা এখন বিস্তারিত পাঠাব।”
প্রস্তাবিত পোস্ট ব্যাংক নিয়ে নিজের কিছু স্বপ্নের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তারানা হালিম।
“বিশেষ একটি কাজ করতে চাই। এখানে প্রত্যেক বাবা-মা তাদের কন্যার লেখাপড়ার জন্য মাত্র পাঁচ টাকা দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট হিসাব খুলতে পারবেন।
“সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাব করব, সেখানে একটু যদি ইনসেনটিভ দেয়, তাহলে কন্যার বয়স যখন ১৮ বছর হবে তখন সেটি আমরা কন্যার হাতে তুলে দিতে চাই। এই অংশটি দিয়ে সে ভবিষ্যতে লেখাপড়ার জীবনটি কনটিনিউ করতে পারবে।”
অন্যদের মধ্যে টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মণ্ডল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।