বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেছেন, তদন্তের ‘অগ্রগতি হলেই’ মামলা করা হবে।
Published : 29 Mar 2017, 04:05 PM
বুধবার ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সানাউল হক।
মুসা বিন শমসেরের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ থাকলে তা তদন্ত সংস্থাকে দিতে অনুরোধ করেন তিনি।
২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুসা বিন শমসেরের বিচারের দাবি উঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের কথা বলা হলেও তাতে কোনো অগ্রগতির খবর দিতে পারেনি তদন্ত সংস্থা।
এই প্রেক্ষাপটে অভিযোগ ওঠে, জাঁকজমকপূর্ণ চলাফেরার জন্য বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশের প্রিন্স’ হিসেবে পরিচয় পাওয়া মুসা প্রধানমন্ত্রীর ফুপাত ভাইয়ের বেয়াই হওয়ায় পার পেয়ে যাচ্ছেন।
তদন্ত সংস্থা ‘পর্যাপ্ত’ প্রমাণ না পাওয়ার কথা বলে এলেও ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, মুসার যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ দিতে তারা ‘তৈরি আছেন’।
এ বিষয়ে গত ২১ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একাত্তরে মুসা বিন শমসেরের যুদ্ধাপরাধের বিভিন্ন অভিযোগের খতিয়ান সেখানে তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা বুধবার সানাউল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “তদন্ত সংস্থা সাত বছর পার করেছে। এই সময়ের মধ্যে তার (মুসা) বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে নাই। যে দুজন সাক্ষী (বিডিনিউজের প্রতিবেদনে দেওয়া এ কে এম আবু ইউসুফ সিদ্দিকী পাখী ও বাবুনাথের বক্তব্য) বক্তব্য দিয়েছে। সে দুজন আমাদেরই সাক্ষী। তাদের সম্পর্কে কথা বলতে চাই না।”
কারও রাজনৈতিক, সামাজিক বা অর্থনৈতিক পরিচয় কোনো সময় তদন্ত সংস্থাকে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরত রাখতে পারেনি দাবি করে তিনি বলেন, “ওই দুইজন সাক্ষী পরিচিত। তারা অন্য দুই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। কাজেই তারা যেহেতু বলেছেন, তাই অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিতে বলব। ফলাফল যদি কিছু হয় আপনারা জানবেন।”
মুসার যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে এক প্রশ্নে সানাউল হক বলেন, “অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান এবং তদন্ত দুটি দুই বিষয়। মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।”
‘অনেক আগে থেকেই’ এ অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনুসন্ধান পর্যায়ে কোনো অভিযোগ তালিকাভুক্ত হয় না। প্রমাণ পেলে তা মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
অনুসন্ধান শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে সে প্রশ্নেও স্পষ্ট কোনো উত্তর সানাউল হক দিতে পারেননি।
“আমরা প্রেডিকশন করি না, স্পেকুলেটও করি না। আমরা ফ্যাক্টস অনুসারে আগাই। যখন ফ্যাক্টস আসবে তখনি আগাব। এ ব্যাপারে টাইমলাইন দেওয়ার অধিকার আমার নাই। আমরা আরও অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে আছি। তার মধ্যে হামদর্দের একজন ট্রাস্টিও আছেন।”