রাষ্ট্রপতি থাকার সময় রাডার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
Published : 08 Jan 2017, 03:06 PM
রোববার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌসুঁলি অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এই আদেশের ফলে রাডার দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা নিম্ন আদালতে স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর এই মামলায় দুদককে সাক্ষীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার অনুমতি দিয়ে ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই আদেশ চেম্বার আদালতও বহাল রেখে মামলার শুনানির জন্য নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠান।
পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে এই মামলার আসামি বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান সুলতান মাহমুদ আবেদনও করেন। এই মামলা ও আবেদনের নিষ্পত্তি করেই আপিল বিভাগ রোববার এ রায় দেয়।
এরশাদ ও সুলতান মাহমুদ এই মামলায় বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা আসামি হিসেবে রয়েছেন।
১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে।
ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ওয়েস্টিন হাউজের রাডার কিনে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ অগাস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে।
আইনি বাধা কাটলে মামলা হওয়ার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ।
২০১৪ সালের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এরশাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দেন।
সেদিন অন্য দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। অন্য আসামি এ কে এম মুসা শুরু থেকেই পলাতক।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ এই মামলায় সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার দায় থেকে মুক্ত। মামলার ধার্য তারিখে তার আইনজীবীই তার পক্ষে হাজির থাকেন।
এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।