রাজধানীর আশকোনার জঙ্গি আস্তানার যে ঘরে জঙ্গি নেতা তানভীর কাদেরীর কিশোর ছেলের লাশ পড়ে আছে, সেখানে ১৯টি গ্রেনেড ও বিস্ফোরকের বেল্ট পেয়েছে পুলিশ।
Published : 25 Dec 2016, 05:42 PM
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন রোববার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, ওই বাসার দুটি কক্ষে তারা প্রবেশ করতে পেরেছেন।
“সেখানে পাঁচটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ছড়িয়ে আছে। আত্মঘাতী হামলার জন্য তৈরি দুটি ভেস্টের মধ্যে ১০ বিস্ফোরক ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে।”
পূর্ব আশকোনায় হজ ক্যাম্পের কাছে সূর্যভিলা নামের ওই তিন তলা বাড়িতে শনিবার প্রথম প্রহর থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এর নাম তারা দিয়েছে ‘অপারেশন রিপল ২৪’।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম রাতে সাংবাদিকদের জানান, ওই বাসা থেকে মোট ১৯টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ‘বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট’ তা নিষ্ক্রিয় করেছে।
উদ্ধার হওয়া অন্যান্য আলামতের মধ্যে রয়েছে বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ল্যাপটপের ভাঙা যন্ত্রাংশ এবং দুটি পিস্তল।
মনিরুল বলেন, “অভিযান চলার সময় বাড়ির ভেতরে তারা কম বেশি প্রায় ১২ লাখ টাকা পুড়িয়েছে। কিছু দলিলপত্র আমরা বাসা থেকে উদ্ধার করেছি।
“আলামত যা পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতে বলা যায়, এখানে একটি বড় কিছু ঘটানোর জন্য তারা জড়ো হয়েছিল। বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।”
মনিরুল বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অভিযানের কারণে তাদের সেইফ হোম কমে গিয়েছিল। এই বাড়িটিকে তারা অফিস হিসেবেও ব্যাবহার করত।”
অভিযানের মধ্যে জঙ্গিনেতা জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা ও তার মেয়ে এবং জঙ্গিনেতা মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা ও তার মেয়ের আত্মসমর্পণের কথা জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
আরেক জঙ্গি নেতা সুমনের স্ত্রী ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে কোমরে বাঁধা গ্রেনেডে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হন। বিস্ফোরণে আহত হয় ইকবালের চার বছর বয়সী মেয়ে। পরে কাদেরীর ১৪ বছর বয়সী ছেলেও নিজের বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অভিযানের সময় পুলিশ ওই বাসায় যে কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়েছিল, তা ঘরে জমে থাকায় শনিবার সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি পুলিশ। সকালে গ্যাস বেরিয়ে গেলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ শুরু করে।