বাংলাদেশে স্কুলগামী শিশুদের প্রায় ৭৭ শতাংশ নিয়মিত পর্নগ্রাফি দেখছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠন।
Published : 02 Oct 2016, 12:43 AM
‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি’ শিরোনামে শনিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। সংগঠনের কর্মসূচি সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান।
শিশুদের পর্নগ্রাফি দেখার সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “মনোসামাজিক সমস্যার পাশাপাশি যৌনতা বিষয়ে শিশুর যে জ্ঞান এবং বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে শিশুর বেড়ে ওঠা একটি বিকৃত যৌন শিক্ষার মধ্য দিয়ে হচ্ছে।”
শিশুদের পর্নগ্রাফিতে আসক্তির জন্য বাবা-মায়ের অজ্ঞানতাকে দায়ী করে এতে বলা হয়, “অভিভাবক নিজেই প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না।
“পর্নগ্রাফি বিষয়ে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- এ সম্পর্কে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নেই যে কী ঘটছে,কারা ঘটাচ্ছে,কেন ঘটছে। এ বিষয়গুলো নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করে এর প্রভাব ও প্রবণতা বের করার কোনো ব্যবস্থা আমাদের নেই।”
এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে শিশু-কিশোরদের মাঝে যৌন শিক্ষার ব্যবস্থা,বয়স উপযোগী করে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানানো এবং কী করা উচিত ও কী উচিত নয় সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শিশুদের নিয়ে কয়েক বছর ধরে গণমাধ্যমে ইতিবাচক সংবাদ কম এসেছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০১৫ সালে শিশু সম্পর্কিত ইতিবাচক ঘটনার ১৬০৪টি সংবাদ প্রকাশিত হয়, যেখানে ২০১৪ সালে ১৬৬৭টি এবং তার আগের বছর ১২৮৬টি খবর আসে।
অপরদিকে ২০১৫ সালে নেতিবাচক ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হয় ২৮২০টি,যেখানে ২০১৪ সালে ৩১৭৯টি এবং ২০১৩ সালে ২৮৯৫টি খবর হয়।
বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, “শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার মূল কারণ হিসেবে তাদের দুর্বল মনে করা হয়। মেয়ে শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার বেশি হচ্ছে।”
প্রতিবেদনে শিশু পরিস্থিতি উন্নয়নে কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু সংক্রান্ত পৃথক একটি অধিদপ্তর স্থাপন,সরকারি উদ্যোগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিশু সুরক্ষা কাঠামো গঠন,জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতিমালা অনুযায়ী শিশশ্রম সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পর্যবেক্ষণের প্রধান কর্তৃপক্ষ হিসাবে শিশুশ্রম ইউনিটকে সক্রিয় করা।
এছাড়া শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা হালনাগাদ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে।