টিআইবির জরিপে দুর্নীতি ও ঘুষের অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান।
Published : 29 Jun 2016, 06:58 PM
পাসপোর্ট সেবা নিয়ে সংস্থাটি দুর্নীতির যে অভিযোগ করেছে তা নিয়ে সচিবের সাফ কথা, “আমাদের বক্তব্য ভিন্ন; এখন আর তা আমাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।”
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এক জরিপ প্রতিবেদনে বলেছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইনশৃঙ্খলা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পাসপোর্ট ও বিচারিকসহ অন্তত ১৬টি খাতে সেবা পেতে বছরে ৮ হাজার ৮২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়।
আর সেবা খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়রানি হতে হয় পাসপোর্ট করতে আসা মানুষজনকে।
সংস্থাটি বলছে, পাসপোর্ট সেবা নিতে ৭৭ দশমিক ৭০ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার ও ৭৬ দশমিক ১০ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিতে হয়।
স্বরাষ্ট্রসচিব এ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, “এই মন্তব্য যারা করেছেন, তাদের বুদ্ধিমত্তার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য ভিন্ন ধরনের।”
“ক্রমেই আমাদের সেবার মানের উন্নতি করছি। একটা সময় হয়ত এরকম কথা আমাদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু এখন সে সময় নেই।
“আমরা এখন অনেক অগ্রসর। আমাদের অনেক স্বচ্ছতা বেড়েছে, সেবার মান বেড়েছে।”
প্রশ্নকারী সাংবাদিককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনি যে কথাগুলো বলছেন, আমি বলব যে এখন সেকথা আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। আমরা মনে করি একটা সময় আসবে যখন তারা তাদের এই মন্তব্য ফেরত নিয়ে যাবে।”
নতুন অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরের ওই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনও উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসম্পাদন চুক্তির পটভূমি বর্ণনা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, দশটি সংস্থার সঙ্গে এই চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রূপকল্প-২০২১ এর যথাযথ বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
“এ জন্য একটি কার্যকর, দক্ষ এবং গতিশীল প্রশাসনিক ব্যবস্থা একান্ত পরিহার্য বলে সরকার মনে করে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে।”
কাজের ধরন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, উক্ত চুক্তির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কার্যদক্রমসমূহের বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্থ বছর শেষে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮৪ নম্বর অর্জন করেছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টি ৩০ জুনের পর মূল্যায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানের অন্যদের মধ্যে পুলিশের মহা-পরিদর্শক, বিজিবি প্রধান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান, কোস্টগার্ড প্রধান, আনসার ও ভিডিপি প্রধান, ফায়ার সার্ভিস প্রধান, পাসপোর্ট প্রধান, কারা অধিদপ্তরের প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।