প্রতিবেশী মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠের ‘বেশ গভীরে’ হওয়ায় বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।
Published : 13 Apr 2016, 10:55 PM
রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার কিছু আগে আঘাত হানা এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকা থেকে ৪৬৫ কিলোমিটার পূর্বে জানিয়ে তিনি বলেন, “ইন্ডিয়া-বার্মা সাবডাকশন প্লেটে খুব শক্তিশালী এ ভূমিকম্পের উৎস্থল ছিল ১৩৫ কিলোমিটার গভীরে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯।
“অন্তত ১ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূকম্পনের প্রচণ্ড ঝাঁকুনিও ছিল। বেশ গভীরতায় ভূকম্পন হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।”
ওই ভূমিকম্পে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেশের কোথাও থেকে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রামে পাঁচটি ভবন হলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
স্বল্প গভীরতায় এ ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থল হলে বাংলাদেশে বিদ্যমান অবকাঠামোয় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশ হতো বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে স্থাপিত আর্থ-অবজারভেটরির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক হুমায়ুন।
“বুধবার প্রায় ৭ মাত্রার ভূকম্পন হয়। ভূগর্ভস্থ এ প্লেটে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৫ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি জমে রয়েছে। স্বল্প গভীরে ও বাংলাদেশের কাছাকাছি এলাকায় কেন্দ্রস্থল হলে ক্ষয়ক্ষতি হবে বেশ।”
এক মাস আগে মনিপুরের ভূমিকম্প ও গত বছর এপ্রিলের নেপাল ভূমিকম্পের তথ্য তুলে ধরে অধ্যাপক হুমায়ুন জানান, নিকট অতীতে বাংলাদেশের আশপাশে এতো শক্তিশালী ভূকম্পন নেই। ১৮৯৭ সালের শিলং ভূমিকম্প (রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৪) ও ১৮৮৫ সালের মানিকগঞ্জ ভূমিকম্প হয়েছিল শক্তিশালী মাত্রায়।
তিনি বলেন, “তখন জনসংখ্যা ছিল খুব কম; ক্ষয়ক্ষতিও কম। এ সময়ে ওই মাত্রার ভূমিকম্প হলে বর্তমান অবকাঠামোয় ক্ষতিক্ষতির ধারণা করা মুশকিল হবে।”
ভূমিকম্পে আতঙ্কিত না হয়ে স্ব স্ব অবস্থানে থেকে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার পরামর্শ পরামর্শ দেন এ শিক্ষক।
সৈয়দ হুমায়ুন বলেন, “আগাম পূর্বাভাস দেওয়া না গেলেও ভূকম্পনের দুর্যোগ মোকাবেলায় সবসময় সতর্ক ও প্রস্তুতি থাকতে হবে। সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
“ভূকম্পনের সময় হুড়োহুড়ি না করে বা রাস্তায় বের না হয়ে ওই মুহূর্তের জন্য স্ব স্ব অবস্থানে থেকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে হবে। ভবনের শক্ত ভিত্তির কাছাকাছি অবস্থান নিতে হবে।”