ঢাকার কল্যাণপুরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদ কার্যক্রমে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 21 Jan 2016, 12:12 PM
সেইসঙ্গে ‘যথাযথ আইন প্রক্রিয়া ছাড়া’ ওই বস্তির বাসিন্দাদের উচ্ছেদ ও হয়রানি না করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক আবেদনে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালতে যখন এ বিষয়ে শুনানি চলছে, তখনও কল্যাণপুরের নতুন বাজার পোড়া বস্তি এলাকায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উচ্ছেদ অভিযান চলছিল।
বস্তিবাসী উচ্ছেদে বাধা দিলে সকালে ওই এলাকায় বিক্ষোভ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
পরে বাধা উপেক্ষা করেই বেলা ১২টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন গণপূর্তের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা চেয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রলায়ের চিঠির অনুলিপি নিয়ে আদালতে আসে আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
উচ্ছেদ অভিযানে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা ওই আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আবু ওবায়দুর রহমান ও অবন্তি নুরুল।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষে শুনানি করেন এ কে এম আসিফুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ আর এম হাসানুজ্জামান ও ফজলে রাব্বী।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কল্যাণপুরের ওই জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলে আসক, একটি বেসরকারি সংস্থা এবং দুই বস্তিবাসী হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।
তাদের আবেদনে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর অবকালশকালীন আদালত স্থিতাবস্থার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করে। পরের বছর ৫ জানুয়ারি হাই কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চেও একই আদেশ আসে।
২০০৬ সালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আবারও উচ্ছেদ চালানোর জন্য চিঠি দিলে আসক ফের আদালত যায়। ওই বছর ২৫ জুন আদালত উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেয়।
বিভিন্ন সময়ে এই মেয়াদ বৃদ্ধির পর ২০০৭ সালের ১৭ জানুয়ারি হাই কোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।
এরপরও চলতি বছর ১০ জানুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ওই জমিতে উচ্ছেদ চালাতে পুলিশ চেয়ে চিঠি দেয়। এই প্রেক্ষাপটে রিট আবেদনকারীরা হাই কোর্টে সম্পূরক আবেদন নিয়ে এলে বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞার আদেশ আসে।
আদেশের পর সারা হোসেন বলেন, “আদালত মন্ত্রণালয়, আইজিপি, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ঢাকার মহানগর হাকিমকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন।”
অন্যদিকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হাসানুজ্জামান বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে নোট পাঠিয়েছি।”