গাইবান্ধার সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের যে আদেশ হাই কোর্ট দিয়েছে, তা স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
Published : 14 Oct 2015, 11:40 AM
এর ফলে এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তারে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি করে বুধবার অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এই স্থগিতাদেশ দেন।
লিটনকে গ্রেপ্তারের আইনি সুযোগ নিয়ে অস্পষ্টতা কাটাতে চেম্বার আদালতে এই আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ বিষয়ে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। অন্যদিকে লিটনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম ও এস এম আরিফুল ইসলাম।
শুনানির পর অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “সাংসদ লিটনকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল তা স্থগিত হয়ে গেছে। ফলে এই মুহুর্তে তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো বাধা নেই। তাকে যেখানেই পাওয়া যাক না কেন, পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে।”
অবশ্য থানায় গিয়ে বা কোনো আদালতে আত্মসমর্পণের সুযোগ সাংসদ লিটনের রয়েছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “এ ধরনের অপরাধ যে করেছে, তার অবিলম্বে গ্রেপ্তার হওয়া উচিৎ।”
অন্যদিকে লিটনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, “চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের এই নির্দেশনা এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। গ্রেপ্তারের বিষয়ে কেনো নির্দেশনা দেননি। আইন আইনের গতিতে চলবে। উনি ইচ্ছে করলে যেকোনো সময় আত্মসমর্পণ করতে পারেন।”
গত ২ অক্টোবর গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য লিটনের ছোড়া গুলিতে শাহাদাত হোসেন সৌরভ নামে নয় বছর বয়সী এক শিশু আহত হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
আহত সৌরভের বাবা সাজু মিয়া ঘটনার পরদিন সাংসদ লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন হাফিজার রহমান নামে সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর শাহাবাজ গ্রামের এক বাসিন্দা।
ওই দুই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে লিটন হাই কোর্টে আবেদন করলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর অবকাশকালীন বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করে দেয়।
সেইসঙ্গে সাংসদ লিটনকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে গাইবান্ধার মুখ্য বিচারকি হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আদেশের পর সাংসদ লিটনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম দাবি করেন, আদালত যেহেতু আত্মসমর্পণের তারিখ ঠিক করে দিয়েছে, সেহেতু ১৮ অক্টোবরের আগে লিটনকে গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই।
অন্যদিকে অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাই কোর্টের আদেশে পুলিশের প্রতি ‘গ্রেপ্তার না করার’ কোনো নির্দেশনা নেই। তারপরও পুলিশ প্রশাসন যাতে ‘দ্বিধাগ্রস্ত না হয়’, সেজন্য সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে তখনই জানিয়ে দেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।