বিচারাধীন বিষয় নিয়ে একাত্তর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত খবর ও আলোচনা অনুষ্ঠানের ভিডিও এবং সেখানে শোনানো দুই বিচারকের কথোপকথনের অডিও টেপ ১৬ অগাস্টের মধ্যে আপিল বিভাগে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
Published : 11 Aug 2015, 02:41 PM
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।
জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা চলার মধ্যেই একাত্তর টেলিভিশনকে এই নির্দেশ দেওয়া হল।
সোমবার আপিল আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে ওই মামলার শুনানিতে জনকণ্ঠের দুই সাংবাদিকের আইনজীবী একটি অডিও রেকর্ডের শ্রুতিলিখন উপস্থাপন করেন, যা বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধ মামলা এবং মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে মামলার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে অন্য এক বিচারকের কথোপকথন বলে আইনজীবীর দাবি।
একাত্তর টেলিভিশন অবমাননা মামলা নিয়ে প্রতিবেদনে ওই অডিও টেপ সম্প্রচার করে। রাতে তাদের সংবাদ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান ‘একাত্তর জার্নাল’- এ ওই টেপের বিষয়ে আলোচনাও হয়।
ওই অনুষ্ঠান নজরে আসায় মঙ্গলবার আপিল বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের মতামত শোনে; পরে ভিডিও ও অডিও জমা দিতে বলে।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “আদালত আমাকে বলেছেন, আমি যেন একাত্তর টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা জানিয়ে দিই।”
এ বিষয়টির সূচনা গত ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠে ‘সাকার পরিবারের তৎপরতা: পালাবার পথ কমে গেছে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ ঘিরে।
স্বদেশ রায় তার ওই লেখায় বিচারকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ২৯ জুলাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায়ের দিন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অবমাননার রুল দেয় আপিল বিভাগ। আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও স্বদেশ রায়কে আদালতে হাজির হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে দুই দিন শুনানির পর সোমবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেয় আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চ।
এ প্রসঙ্গ টেনে অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “জনকণ্ঠের আদালত অবমাননা মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায়ের জন্য ১৩ অগাস্ট ধার্য আছে। কিন্তু এর ভেতরে একাত্তর টেলিভিশন প্রধান বিচারপতির যে কথপোকথনের টেপ খবরে প্রধান শিরোনাম করে প্রচার করেছে, এই ব্যাপারে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আদেশ জারি করেছে।”
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “যে বিচারাধীন বিষয়ে এবং যেই টেপ আদালতে বাজাতে দেওয়া হয়নি এবং যে বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করলে আদালত নিয়ে কুৎসা রটানো হয়, সেটি আবার বাজিয়ে দেশবাসীকে শুনিয়ে তারা আদালত অবমাননা করেছেন কি না- এটিই আদালত পরীক্ষা করবে।”
একাত্তর টেলিভিশন প্রধান বিচারপতির ছবি দিয়ে এবং কথোপকথনের অন্য ব্যক্তির ছবি না দিয়ে যেভাবে প্রচার করেছে, তাতে আদালত অবমনানা হয়েছে বলেই অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল বেঞ্চে মত দিয়েছেন।
মাহমুদুল ইসলাম কী বলেছেন জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, “তিনিও আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, অন্যান্য মিডিয়া আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বা সাংবাদিকতার নীতির প্রতি লক্ষ্য রেখে এটাকে কোনো রকম প্রকাশ করেনি। আমার মতে, একাত্তর টেলিভিশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এটা করেছে।”