সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির তদন্তে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ফলাফল পরিবর্তনের সত্যতা মেলে।
Published : 06 Oct 2024, 07:34 PM
অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের উত্তীর্ণ দেখিয়ে নিয়োগের অভিযোগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
দুদকের উপপরিচালক সুমিত্রা সেন ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা কার্যালয়ে রোববার এই মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের বিষয়টি দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, কালচারাল অফিসার আল মামুন, মো. হামিদুর রহমান, বেগম সুদীপ্তা চক্রবর্তী, হাসান মাহমুদ, বেগম রুনা লায়লা মাহমুদ, সহকারী পরিচালক (বাজেট ও প্ল্যানিং) বেগম সামিরা আহমেদ, স্টেজ ম্যানেজার বেগম রহিমা খাতুন, গাইড লেকচারার মো. মাহাবুবুর রহমান, ইনস্ট্রাকটর (সংগীত ও যন্ত্র) বেগম মীন আরা পারভীন, ইনস্ট্রাকটর (নৃত্য) বেগম প্রিয়াংকা সাহা, যন্ত্রশিল্পী (গ্রেড-৩) নারায়ণ দেব লিটন, যন্ত্রশিল্পী (গ্রেড-৩) মোহাম্মদ জিয়াউল আবেদীন, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩) বেগম লায়লা ইয়াসমিন, বেগম মিফতাহল বিনতে মাসুক ও বেগম সুমাইতাহ তাবাসসুম খানম, কণ্ঠশিল্পী বেগম রোকসানা আক্তার রূপসা, আবদুল্লাহেল রাফি তালুকদার, মো. সোহানুর রহমান, বেগম আবিদা রহমান সেতু, বেগম মোহনা খাস এবং ক্যামেরাম্যান (জনসংযোগ) মো. রুবেল মিয়া।
আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “লিয়াকত আলী লাকী এবং জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী নিয়োগের পরস্পর যোগসাজশে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরীক্ষার নম্বরপত্রে নম্বর বাড়িয়ে অবৈধভাবে ১০টি পদে ২৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন।
“পরবর্তীতে অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিভিন্ন পদে যোগদান করিয়ে তাদের বেতনভাতা বাবদ ৮ কোটি ২৮ লাখ ৪৯৫ টাকা উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সংশ্লিষ্টরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।”
মামলার এজাহারে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, অনুসন্ধানে বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ২০১৫ সালের বিভিন্ন সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেসব আবেদন যাচাইবাছাই করে ৪টি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শূন্য পদে বাছাইকৃত উপযুক্ত আবেদনকারীদের লিখিত পরীক্ষা নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ফরিদ উদ্দীন আহমেদকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
ওইসব পদে ২০১৬ সালের মার্চে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ফলাফল বিধি এবং কোটা পর্যালোচনা করে ১৩টি পদে ৪৭ জনের নিয়োগ দেয়া হয়।
পরে ‘শিল্পকলা একাডেমিতে লিখিত পরীক্ষায় পাস না করেও সরকারি চাকরি করে চলেছেন ৪৬ জন’ শিরোনামে বেসরকারি নাগরিক টেলিভিশনে ২০২০ সালের অক্টোবরে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেই সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির তদন্তে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ফলাফল পরিবর্তনের সত্যতা মেলে।
দুদকের অনুসন্ধানেও বিষয়টির সত্যতা মেলায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন ঘটনার সময়কাল হিসেবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।