গেল মাসে ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৪ জনের প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন ৭৬ জন।
Published : 10 Nov 2023, 01:21 PM
গেল অক্টোবর মাসে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মৃত্যু ঘটেছে, তার এক তৃতীয়াংশের শিকার হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহীরা।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, অক্টোবরের ৩১ দিনে দেশে ৪২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জন নিহত এবং ৬৮১ জন আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৪ জনের প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন ৭৬ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার এই সংখ্যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ শতাংশ, আর মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩ শতাংশ।
এই সময় রেলপথে ২৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত এবং ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। আর নৌ-পথে ছয়টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত, ২ জন আহত এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বরাবরের মতই মূলত সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য সঙ্কলন করে দুর্ঘটনার এই পরিসংখ্যান তৈরি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাসিক এই দুর্ঘটনা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
তাদের হিসাবে অক্টোবরে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সব মিলিয়ে মোট ৪৬৪ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে ৫০২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৮৩৮ জন।
মোটরসাইকেলের পর ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রাক, পিকআপ, কভার্ডভ্যান বা লরি; ২১ দশমিক ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে বাস; ১৮ দশমিক ৬১ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক; ৩ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে অটোরিকশা; ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর বা লেগুনা; ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ ঘটনায় কার, জিপ বা মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
এই মাসে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪১ জন নিহত এবং ১৩২ জন আহত হয়েছেন।
সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সেখানে ২৪টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত, ৮৪ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, অক্টোবরে সড়কে দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১২০ জন চালক, ৩৬ জন পথচারী, ২৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫২ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন শিক্ষক, ৬৮ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক , ১ জন আইনজীবী, ১ জন প্রকৌশলী এবং ১০ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
মোট দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ হয়েছে জাতীয় মহাসড়কে। এছাড়া ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
সারা দেশে মোট দুর্ঘটনার ৯ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে। এক দশমিক ৩৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে হয়েছে।
দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণও লিপিবদ্ধ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সেগুলো হল–
· ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতি বৃদ্ধি।
· মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি এবং এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল।
· সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়ক বাতি না থাকা । রাতের বেলায় ফগ লাইটের অবাধ ব্যবহার।
· গত বর্ষায় সড়ক মহাসড়কের ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি।
· যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
· উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি।
· অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।