“তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি যে সক্ষমতা ছিল, অথচ ব্যবস্থা নেয়নি”, যুক্তরাষ্ট্রের দুই সংস্থার প্রতিবেদন নিয়ে বলেন তিনি।
Published : 03 Apr 2024, 07:33 PM
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এর প্রতিবেদনে ‘খারাপ কিছু’ বলা হয়নি বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
আনুষ্ঠানিক বৈঠক না হলেও এই প্রতিবেদন কমিশন দেখেছে, আলোচনাও করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছে, আমাদের দৃষ্টিতে দেখিনি যে খারাপ কিছু বলেছে। আমরা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করেছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের দুই সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেই আগামী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাওয়ার কথা বলেছেন এই নির্বাচন কমিশনার।
বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
আলমগীর বলেন, “ভোট নিয়ে ভালো দিক এবং দুর্বল দিক কী দেখেছে তা ইসি সচিবালয়কে ‘সামারি’ করার জন্য বলা হয়েছে। তারা খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন রেখে যাব।”
গত ৭ জানুয়ারির ভোট নিয়ে ১৭ মার্চ এনডিআই-আইআরআইয়ের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, “২০২৪ সালের নির্বাচনের সময়ে অতীতের তুলনায় ‘কম শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতার’ ঘটনা ঘটেছে। এটা প্রধানত দেশব্যাপী দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুপস্থিতি এবং নির্বাচনের নিরাপত্তার বিষয়ে রাষ্ট্রের বাড়তি নজর দেওয়ার কারণে।”
রাষ্ট্রীয়, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধীদের সহিংসতার কারণে জানুয়ারির নির্বাচন মান ‘ক্ষুণ্ন’ হওয়ার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সংস্থা।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, “তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখব।
“তারা যে সুপারিশ করেছে সেটা করা (বাস্তবায়ন) যায় কি না সেটা আমরা দেখব। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব, সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাব।”
যেসব কেন্দ্রে কারচুপির কথা বলা হয়েছে, সেসব কেন্দ্রে কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে দাবি করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, “যদি বলা হত কমিশন অবহেলা করেছে, এমন তো বলেনি।
“তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি যে সক্ষমতা ছিল, অথচ ব্যবস্থা নেয়নি; অথবা সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে জাল ভোট হয়েছে, কিন্তু কমিশন বন্ধ করেনি, এমন কোনো রিপোর্ট নেই। বরং কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তাদের রিপোর্টে আছে। প্রশাসনে রদবদল করেছে এগুলোও আছে।
“তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছে, আমাদের দৃষ্টিতে দেখিনি যে খারাপ কিছু বলেছে। আমরা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেটা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।”
উপজেলা ভোট
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ২৫০ জন ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থন তালিকা দেওয়ার বিধান বাতিল করে বর্তমান কমিশন।
মো. আলমগীর বলেন, “সমর্থন দেখানোর জন্য প্রার্থীরা ছলচাতুরি, মিথ্যার আশ্রয় নিতেন। সব কিছু পর্যালোচনা করে ইসির ক্ষমতা বলে বিধানটি বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু সংসদ নির্বাচনে ১ শতাংশ ভোটারের বিধান বাদ দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
“সংসদ নির্বাচন থেকে তুলে দিতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। এজন্য পার্লামেন্টে যেতে হবে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি।”
আইন সংসদ করে উপজেলা নির্বাচনে ডিজিটাল প্রচারের বিষয়টি যুক্ত হওয়া প্রার্থীদের প্রচারণার খরচ কমে বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “ইউটিউবে নির্বাচনি প্রচারণায় খরচ নেই। ফেইসবুকে নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো খরচ নাই। শুধুমাত্র মোবাইলে এসএমএস পাঠানো, সেখানেও খরচ কম।”
আরো পড়ুন-
সহিংসতা ‘কম’ হলেও নির্বাচনের মানে সন্তুষ্ট হয়নি এনডিআই-আইআরআই